SSC মামলা, সুপ্রিম কোর্ট: সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি ২৬০০০ চাকরি বাতিল মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাব্য তারিখ ৭ জানুয়ারি। এছাড়া ঐ দিন রয়েছে ডিএ মামলা এবং ওবিসি মামলা। শীর্ষ আদালতে দিনভর শুনানির পরও যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থী বাছাই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হল না। ফলে এসএসসি-তে ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ ঝুলেই রইল।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা না-গেলে পুরো প্যানেল বাতিল বাতিল করতে হবে।” এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জানুয়ারি মাসে।
যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করতে মেটা ডেটা খুঁজে বার করতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “তা না হলে আমরা যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা বাছাই করতে পারব না।” একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, “সঠিক বিষয় হল এসএসসি মিরর ইমেজ রাখেনি। আসল কপি নেই। প্রমাণ বলতে শুধুমাত্র স্ক্যান কপি রয়েছে। আবার তার সঙ্গে এসএসসির বসানো নম্বরের মিল নেই। এমনকি স্ক্যানিং-এ অনিয়ম করা হয়েছে।”
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে পরবর্তী শুনানি জানুয়ারি মাসে। তবে সুপ্রিম কোর্ট ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে, যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থী বাছাই না হলে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দেওয়া হবে। এদিন ওএমআর শিট, ‘সুপার নিউমেরারি’ পোস্ট সংক্রান্ত বিষয়ে শীর্ষ আদালতের একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়ে সিবিআই, এসএসসি ও রাজ্যের আইনজীবী।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। বাদী-বিবাদী পক্ষের সওয়াল জবাবের মাঝেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার পর্যবেক্ষণ, “জানি না, ডাল মে কালা, ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়।” ওএমআর শিটে রদলবদল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, এসএসসি এখন বলছে যোগ্য-অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব। কিন্তু হাই কোর্ট কেন বলল তাঁদের আলাদা করা সম্ভব নয়? কোন কোন ওএমআর শিটের তথ্য ক্যাপচার করে রাখা হয়েছে, তা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দুপুর ২টোর মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের তৈরি সুপার নিউমেরারি পদ নিয়েও। প্রশ্নের মুখে সিবিআই তদন্তও।
কী হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২৬ হাজার চাকরিজীবীর ভবিষ্যৎ? পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে, নাকি শনাক্ত হবে বৈধ-অবৈধ চাকরি? আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে চলছে এসএসসি মামলার শুনানি। সেই শুনানি চলাকালীন অতিরিক্ত শূন্যপদ এবং ওএমআর শিট নিয়ে প্রধান বিচারপতির একাধিক প্রশ্নের মুখে রাজ্য এবং সিবিআই।
আপনারা অতিরিক্ত শূন্য পদ কেন তৈরি করেছিলেন?’ যদিও রাজ্যের তরফে বলা হয়, ‘যখন নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তিকে সনাক্ত করা গেছে তখন কেন প্রায় ২৬ হাজার ব্যক্তিকে বের করে দেওয়া হবে? কাউকে নিয়োগ করিনি, মানবিক কারণে কলকাতা হাইকোর্ট একজনকে নিয়োগপত্র দিতে বলেছিল’, সওয়াল রাজ্যের।
যদিও প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এরপর বলেন, ‘অতিরিক্ত শূন্য পদ যখন তৈরি করলেন, সেই মুহূর্তেই নিশ্চিত করলেন অবৈধদের যাতে চাকরি থেকে বের না করে দেওয়া হয়’।
শুধু শূন্যপদ নয়, ওএমআর শিট নিয়েও একাধিক প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানতে চান, ‘ওএমআর শিট কবে নষ্ট করে দেওয়া যায় তার কোনও নিয়ম আছে? OMR শিটের মিরর ইমেজ কি এসএসসি সংরক্ষণ করেছিল? SSC-র কি উচিত ছিল না মিরর ইমেজ রেখে দেওয়া? কারণ এ ক্ষেত্রে আসল নথি হচ্ছে ওএমআর । OMR শিট পরে ভর্তি করা হয়ে থাকে বা পরিচয় গোপন করা হয়ে থাকলে, সেটা OMR থেকেই দেখা যেত। মূল কথা সেটা হল যে, আমাদের হাতে আসল OMR নেই। এমন কোনও স্ক্যানড কপি বা মিরর ইমেজ নেই যেটা আমরা দেখতে পারি? স্ক্যানিং এর ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে, ডেটা স্ক্যানটেক এই কাজ SSC-র অফিসে করেছে। আমাদের কাছে আসল omr এর কোনো ইমেজ নেই, এগুলো যদি সত্যি হয় তাহলে বৈধ-অবৈধ আলাদা করার কোনো উপায় নেই, সমস্ত পরীক্ষার্থীর OMR শিট সার্ভারে আছে ? নাকি কিছু হারিয়ে গেছে?’
এ বিষয়ে রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, ওএমআর শিট এক বছর পরে নষ্ট করে দেওয়া যায়, সেই নিয়ম আছে। তবে ওএমআর শিট এর কোনও মিরর ইমেজ সংরক্ষণ করা হয়নি’।
২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলা নিয়ে বড় খবর সামনে এল। যোগ্য-অযোগ্যদের চিহ্নিত করা সম্ভব, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে শুরু হয় শুনানি। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “নম্বর কারচুপি হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে।” তার পরেই তিনি রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বাছাই করতে রাজ্যের সম্মতি রয়েছে কি না। রাজ্যের আইনজীবী জানান, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাইয়ে তাঁদের সমর্থন রয়েছে। নিজেদের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর সংযোজন, তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য দিয়েছে।
এসএসসির আইনজীবী আদালতে জানান, নিয়োগ তালিকায় থাকা যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করা সম্ভব? তার পরেই এসএসসির উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “আমাকে বোঝান কেন হাই কোর্ট বলল (যোগ্য-অযোগ্য) আলাদা করা সম্ভব নয়?”
সিবিআই-এর রিপোর্টে পাঁচ হাজারেরও বেশি নিয়োগে যে দুর্নীতি রয়েছে, তা স্বীকার করেছে নিয়েছে রাজ্য। রাজ্যের তরফে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী শুনানিতে এও জানিয়েছেন, যে বেনিয়মগুলো হয়েছে, তাতে রাজ্যের ক্যাবিনেট সেগুলিতে ইচ্ছা করে সেগুলিতে প্রোকেক্ট করার চেষ্টা করেছে। প্রধান বিচারপতি তখন প্রশ্ন করেন, পৃথকীকরণ কি করা সম্ভব? অর্থাৎ যোগ্য অযোগ্যদের কি আলাদা করা সম্ভব? রাজ্যের আইনজীবী জানান, রাজ্য সরকার সেটাই করতে চেয়েছে, কারণ সিবিআই একাধিক তথ্য জমা করেছে।
এসএসসি-র তরফে আইনজীবী জয়দীপ ঘোষও জানিয়েছেন, পৃথকীকরণ সম্ভব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এতদিন কেন পৃথকীকরণ হল না? এসএসসির উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন করেন, “আমাকে বোঝান কেন হাই কোর্ট বলল (যোগ্য-অযোগ্য) আলাদা করা সম্ভব নয়?”
বৃহস্পতিবারের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “৬৫বি নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। ৬৫বি করলে বোঝা সম্ভব হার্ড ডিস্ক থেকে কী ডাউনলোড করা হয়েছে। আর কী আপলোড করা হয়েছিল। এর সঙ্গে প্রমাণের কী সম্পর্ক রয়েছে?” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “৬৫বি করে বোঝা সম্ভব নয় সার্ভারে তথ্য কারচুপি হয়েছে।”
সুপ্রিম কোর্টের আজ প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি। এর আগে মামলাটি শুনেছিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় হাইকোর্টের চাকরি বাতিল নির্দেশ স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার এজলাসে মামলা উঠে। ওই দিন বিচারপতি বলেছিলেন, গোটা প্যানেল নাকি বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের চাকরি বাতিল হবে, তা নিয়ে শুনানি হবে।