SSC: যোগ্য-অযোগ্য বাছাই না হলে বাতিল পুরো প্যানেল জানাল সুপ্রিম কোর্ট, ৫০০০ অযোগ্যর জন্য ২৬০০০ ভুগবে কেন? উঠছে প্রশ্ন

কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া কোনও নিয়োগ সম্ভব নয়। আর সিবিআই যখন নির্দিষ্ট সংখ্যক অযোগ্যদের চিহ্নিত করতে পেরেছে তাহলে কেন সকলের নিয়োগ বাতিল করা হবে?

7751
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না

নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ৫০০০ অযোগ্যর জন্য কেন ২৬০০০-এর চাকরি বাতিলের কথা বলা হচ্ছে? এমনই প্রশ্ন যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের। তবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা না-গেলে পুরো প্যানেল বাতিল বাতিল করতে হবে।” এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে জানুয়ারি মাসে।

যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করতে মেটা ডেটা খুঁজে বার করতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “তা না হলে আমরা যোগ্য এবং অযোগ্য তালিকা বাছাই করতে পারব না।” একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, “সঠিক বিষয় হল এসএসসি মিরর ইমেজ রাখেনি। আসল কপি নেই। প্রমাণ বলতে শুধুমাত্র স্ক্যান কপি রয়েছে। আবার তার সঙ্গে এসএসসির বসানো নম্বরের মিল নেই। এমনকি স্ক্যানিং-এ অনিয়ম করা হয়েছে।”

সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছে কমিশন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানিতে নিজের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) শিক্ষক-অশিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত করতে নেমে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করতে পারেনি CBI।

পড়ুন:  SSC: গ্রেফতার যোগ্য শিক্ষকরা! নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি, সেগ্রিগেশনের দাবিতে অভিযান

আবেদনকারীদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি সওয়ালে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে আমরা ১০০০০ লোক চাকরি করছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। সিবিআই চারটি স্তরে তদন্ত করেছে, তাঁদের বিরদ্ধে কিছুই পাওয়া যায়নি৷ সেই ১০০০০ চাকুরিরতর ভবিষ্যত কী হবে? হাইকোর্ট এই ভাবে ২৬০০০ লোকের চাকরি বাতিল করার অর্ডার দেয় কী করে?  অরিজিনাল ওএমআর শিট পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁদের জীবন অন্ধকার করা যায় না!”

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) তরফে সওয়াল করতে গিয়ে বর্ষীয়ান আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত দাবি করেন, আদালতের নির্দেশ হলে যোগ্য এবং অযোগ্য ব্যক্তিদের বাছাইয়ের কাজ করে দেবে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ তাঁর কথায়, ”২৬০০০ লোক চাকরি হারাতে পারে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন৷  আমরা জানি কয়েকজন দুর্নীতি করেছে, কিন্তু সবাই নয়। ২২ লক্ষ প্রার্থী ছিল। দফায় দফায় পরীক্ষা হয়েছে। সবার ওএমআর শিট সংরক্ষণ করার জায়গা ছিল না। রুল বলেছে এক বছর পরে ওএমআর শিট ধ্বংস করে ফেলা যায়। ২০২১ সাল পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি।”

পড়ুন:  BIG NEWS: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মিলল ছাড়পত্র, ডিএলএড মামলায় বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের

অভিষেক মনু সিংভির মতোই ২৬০০০ চাকরি বাতিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান।

এদিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওএমআর শিটে রদবদল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। জানতে চান, অযোগ্যদের প্রাধান্য দিতে কি অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল। 

রাজ্যের আইনজীবী বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া কোনও নিয়োগ সম্ভব নয়। আর সিবিআই যখন নির্দিষ্ট সংখ্যক অযোগ্যদের চিহ্নিত করতে পেরেছে তাহলে কেন সকলের নিয়োগ বাতিল করা হবে? এরপর সিবিআই তদন্ত নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন CJI সঞ্জীব খান্না। রাজ্যের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদি (Rakesh Dwivedi) এদিন জানিয়েছে, সাধারণত এক বছর পরে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়। তবে ‘মিরর ইমেজ’ সংরক্ষণ করে রেখেছে এসএসসি (SSC)। এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, “সাধারণভাবে এটা ঠিক নয়। কেউ ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ সংরক্ষণ করে রাখেনি। এসএসসি করেনি। তারা দায়িত্ব দিয়েছিল নাইসাকে। নাইসা আবার স্ক্যানটেককে তথ্য দেয়। তারাও সংরক্ষণ করেনি। স্ক্যানটেক স্ক্যান করেই ছেড়ে দিয়েছিল। একটা জিনিস পরিষ্কার, আসল এবং স্ক্যান ওএমআর শিট একই নয়।” সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে প্রধান বিচারপতি জানান, ৭ জানুয়ারি হবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।