কলকাতা, ২৩ মে ২০২৫: এসএসএসি চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিকাশ ভবনের সামনে চলমান আন্দোলনে বড় ধাক্কা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশে এখন থেকে সেন্ট্রাল পার্কে (বিকাশ ভবনের বিপরীতে) শর্তসাপেক্ষে অবস্থান করতে পারবেন বিক্ষোভকারীরা। আদালতের সম্মতি অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ২০০ জন ১২ ঘণ্টা অন্তর পালাবদলে (রোটেশনাল বেসিস) শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালাতে পারবেন।
চাকরিহারাদের উদ্দেশে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘আপনারা ওখানে ১৫–১৬ দিন আন্দোলন করছেন। আপনাদের প্রতি আমি সমব্যথী। কিন্তু আমাকে তো সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে। আপনারা উল্টোদিকে সেন্ট্রাল পার্কে অবস্থান করুন। আপনাদের প্রতি সবাই সমব্যথী। আইন শৃঙ্খলার অবনতি যেন না হয় সেটা খেয়াল রাখুন। এমন ব্যবহার করুন যাতে শিক্ষকদের সম্মান থাকে।’
কলকাতা হাইকোর্টের শর্তাবলি:
১. প্রতিনিধি তালিকা: আন্দোলনকারীদের ১০ জন প্রতিনিধির নাম পুলিশকে জানাতে হবে। এই তালিকা আজই জমা দিতে হবে।
২. সুবিধা ব্যবস্থাপনা: অবস্থান স্থলে ছাউনি, পর্যাপ্ত পানীয় জল ও বায়ো টয়লেটের বন্দোবস্ত করতে হবে।
৩. নিরাপত্তা: পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের মতো কঠোর পদক্ষেপ এড়িয়ে চলবে। শিক্ষা পর্ষদও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করবে না।
৪. শান্তি বজায়: ২০০ জনের বেশি জমায়েত বা অশান্তির ঘটনায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, তবে প্রতিনিধিদের আগে জানাতে হবে।
আদালতের মন্তব্য
বিচারপতি ঘোষ বলেন, “আপনারা নথিভুক্ত সংগঠন নন, পরিস্থিতির চাপে আন্দোলন করছেন। তাই বিকাশ ভবনের পরিবর্তে সেন্ট্রাল পার্কে শর্ত মেনে বিক্ষোভ করুন।” তিনি আরও সতর্ক করেন, “বিক্ষোভস্থলের বাইরে কেউ গণ্ডগোল করলে পুলিশ স্বাধীনভাবে ব্যবস্থা নেবে।”
পটভূমি
এসএসসি শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে গত কয়েক মাস ধরে চলছে এই আন্দোলন। শিক্ষকরা দাবি করেন, যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আদালতের এই নির্দেশের পর এখন আন্দোলনের গতিপথ কতটা বদলায়, তা নিয়ে কৌতূহল।
পরবর্তী পদক্ষেপ
রাজ্য সরকার ও আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে শপথপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী শুনানিতে আদালত বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন।