SSC মামলা, সুপ্রিম কোর্ট: ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি চলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম মামলার মাঝেই ফের আন্দোলনে নামছেন ‘যোগ্য’ চাকরি প্রার্থীরা। ২০১৬ সালের বিজ্ঞাপনে ‘দুর্নীতি মুক্ত’ ‘স্বচ্ছভাবে’ নিযুক্ত স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) শিক্ষক-শিক্ষিকারা আরও একবার আন্দোলনে নামতে চলেছেন।
তাঁদের দাবি, শীর্ষ আদালতে এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত তথ্য প্রদান ও দক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করে ন্যায় পাইয়ে দেওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে।
এই দাবিতে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’ আগামীকাল শুক্রবার, ২৪/০১/২০২৫ তারিখে স্কুল সার্ভিস কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছে। সমস্ত যোগ্য শিক্ষকদেরকে এই কর্মসূচিতে আসার আবেদন জানানো হয়েছে।
আগামী ২৭ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে এই চাকরি বাতিল মামলার গুরুত্বপুর্ন শুনানি হতে চলেছে। সেই শুনানিতে রেসপন্ডেন্ট হিসেবে বিরোধী আইনজীবীরার পাশাপাশি, সিবিআই এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন বক্তব্য রাখবে। তাঁর আগেই কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন যোগ্য শিক্ষকরা।
এই বিষয়ে এক যোগ্য শিক্ষক বলেন, “আগামীকাল ২৪তারিখ ১১ টার সময় করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা সমবেত হবেন। এরপর সেখান থেকে মিছিল যাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন দপ্তরের সামনে। আমাদের প্রতিটি দাবি না মানা হলে এই আন্দোলন দীর্ঘায়িত হবে মহীরুহ আকার ধারণ করবে। আমরা সকলের উপস্থিতি কামনা করছি।”
সকল যোগ্য শিক্ষকদের এবার রাস্তায় বের হবার আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, ‘নবম-দশমে ৮.৫% ও একাদশ-দ্বাদশে ১৪.৪৭% অবৈধ ভাবে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যে তালিকা দিয়েছিল সিবিআই, আমরা সেই লিস্টে নেই। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে নিযুক্ত হয়েছিলাম। সার্বিক ভাবে প্যানেল বাতিলের বিরুদ্ধে এবং সমস্ত রকম রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও হুঁশিয়ারির বিরুদ্ধে এই আন্দোলন।’
যোগ্য শিক্ষকদের মঞ্চের তরফে আগেই বলা হয়েছে, ‘যে ১৭ দফা অভিযোগে গোটা নিয়োগ প্যানেল বাতিল করা হয়েছে, আমরা সেই অভিযোগগুলোর একটিরও অন্তর্ভুক্ত নই। অন্যের ভুলের জন্য আমাদের জীবন জীবিকা সঙ্কটে পড়তে পারে না। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে প্রায় ১৭,২০০ শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে সাড়ে ১৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নামে কোনও রকম দুর্নীতির অভিযোগ নেই। এমনকী কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিত বাগ কমিটি এবং সিবিআই-এর তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে অবৈধ ভাবে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার হার যথাক্রমে সাড়ে ৮ ও ১৪.৪৭%। অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের আড়াল করতে গিয়ে, বৈধ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি ২৬০০০ চাকরি বাতিল মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৭ জানুয়ারি। গত শুনানিতে শীর্ষ আদালতে যোগ্য শিক্ষকদের পক্ষে আইনজীবীরা বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। আগামী শুনানিতে বিরোধী আইনজীবীর পাশাপাশি এসএসসি এবং সিবিআই নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবে। আদালত আগেই যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের কথা বলেছিল। ফলে এসএসসি-তে ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ ঝুলেই রয়েছে।