নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য এবং অযোগ্য শিক্ষকদের বাছাই করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন যোগ্য শিক্ষকরা। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে জড়ো হন তাঁরা। এই বিক্ষোভ কর্মসূচির শুরুতেই পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হল তাঁদের। বিক্ষোভরত শিক্ষকরা রাস্তা আটকে বিক্ষোভের চেষ্টা করলে, গোটা চত্বরে তুমূল উত্তেজনা তৈরী হয়। বিক্ষোভরত ৫০০ জন শিক্ষকদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। যোগ্য শিক্ষকদেরকে গ্রেফতার করা নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এর প্রতিবাদে টিফিনের সময় রাজ্যজুড়ে বিদ্যালয় গুলিতে ধিক্কার সভার ডাক দিলেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনকারী যোগ্য শিক্ষকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ—এই তিন প্রতিষ্ঠান আদালতে তিন ধরনের বক্তব্য তুলে ধরছে। সেই কারণেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন এসএলএসটির ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা। যোগ্য শিক্ষকদের বক্তব্য, ‘যোগ্য’ হয়েও তাঁদের চাকরি বর্তমানে সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। হিসাব অনুসারে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন।
এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারন সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “গতকাল যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাগণের ন্যায্য আন্দোলনের উপর পুলিশি আক্রমণের প্রতিবাদে এবং সেগ্রিগেশনের দাবিতে রাজ্যজুড়ে বিদ্যালয়গুলিতে আজ ৭ ফেব্রুয়ারি টিফিনের সময় ধিক্কার সভার ডাক দিচ্ছি। সিনিয়র শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীসহ সবাইকে এই আন্দোলনের পাশে থাকতে হবে। হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকারা রাস্তায় নেমে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ প্রার্থনা করছে অথচ জনপ্রতিনিধি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ১০ মিনিট সময় নেই! এসএসসি ও সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সেগ্রিগেশন করে যোগ্যদের সসম্মানে পুনর্বহালের দায়িত্ব নিতে হবে।”
বৃহত্তর গ্রাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক মাননীয় সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, “আজ কলকাতায় যোগ্য শিক্ষকদের উপর যে পুলিশি অত্যাচার হয়েছে তার প্রতিবাদে আমরা আগামীকাল সমস্ত স্কুলে কালো ব্যাচ পড়ে প্রতিবাদ জানাবো।”
এদিকে, বিক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা চাইছেন এসএলএসটি চাকরিজীবীদের মধ্যে যোগ্য এবং অযোগ্য শিক্ষকদের পৃথক করা হোক। ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হলে, আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। এমনকী, মাধ্যমিক পরীক্ষার ডিউটিতে যোগ না-দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভরত শিক্ষকদের একাংশ। এক্ষেত্রে মাধ্যমিকের ডিউটিতে যোগ না-দিলে, পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনাতেও সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষা মহলের একাংশ।