নিউজ ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে রাজ্য কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার (ডিএ) ২৫ শতাংশ, অর্থাৎ ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি পরিমাণ শীঘ্রই পরিশোধ করতে হবে। এই রায়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে এই অর্থ যোগাড় করা জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যের কাছে দুটি পথ খোলা রয়েছে—এক, আদেশ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর বেঞ্চে আবেদন; দুই, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের তহবিল কাটছাঁট। তবে আইনবিদদের মতে, আদেশ চ্যালেঞ্জের সুযোগ কম। ফলে লক্ষ্মীর ভান্ডার, গ্রামীণ সড়ক বা আবাস যোজনার মতো প্রকল্পে বাজেট কাটছাঁটের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের ঋণ বোঝা জিডিপির ৩৮%, যা জাতীয় স্তরে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ। এমতাবস্থায় অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা তোলা কঠিন। রাজ্য কর্মচারীরা বর্তমানে ১৮% ডিএ পেলেও কেন্দ্রীয় কর্মীদের তুলনায় ৩৭% ব্যবধান রয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের পরামর্শ নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে, তৃণমূল নেতাদের আশঙ্কা, জনসাধারণের প্রকল্পে টানাটানি ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে।
মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতে, মন্দির নির্মাণ বা ক্লাব অনুদানের মতো খাত থেকে টাকা সরিয়ে ডিএ পরিশোধ সম্ভব, জনকল্যাণ প্রকল্প থামানোর দরকার নেই। তবে, আদালতের সময়সীমা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে—কেউ বলছেন চার সপ্তাহ, কেউ তিন মাস। রায়ের বিস্তারিত পাঠ্যেই কেবল স্পষ্ট হবে এই সময়সীমা। মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই এই বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ দেওয়া সরকারের কাছে গোদের উপর বিষফোড়ার শামিল বলে মনে করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘রাজ্যের প্রচুর অর্থ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। কিন্তু জনসাধারণের স্বার্থে ওই প্রকল্পগুলি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এখন রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ থেকে গ্রামীণ সড়ক যোজনার টাকাও দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য বাজেটে নির্ধারিত বরাদ্দও রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোন খাত থেকে কাটছাঁট করে ডিএ-র টাকা জোগাড় করা যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’’ তিনি এ-ও জানান যে, এ ব্যাপারে অর্থনৈতিক বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা তথা রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের পরামর্শ নেওয়া হতে পারে।