নিউজ ডেস্ক: এবার এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। কলকাতা পুলিসে মহিলা কনস্টেবল পদে নাকি কর্মরত রয়েছেন এক বাংলাদেশি নাগরিক। যার জেরে এবার খোদ কলকাতা পুলিস কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে কেঁচো খুড়তে গিয়ে এই কেউটের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করেছেন মামলাকারী তথা নদীয়ার গাংনাপুরের বাসিন্দা শুভঙ্কর সরকার।
ওই ব্যক্তির অভিযোগ, সুতপা সিংহ নামে এক বাংলাদেশি মহিলা এদেশে এসে বিভিন্ন নথি জাল করে কলকাতা পুলিসে কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন।
শুভঙ্কর দাবি করেছেন, গাংনাপুর থানা এলাকায় দেবগ্রামের মাঠের পাড়া এলাকায় বেশ কিছুটা জমি-সহ তাঁর বাড়ি রয়েছে। অভিযোগ, সেই জমির পাশেই সুতপার বাবা প্রমথ সিংহ’র জমি রয়েছে। শাসক দলের স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগসাজশ করে মামলাকারীর জমি হাতানোর ছক কষেছিল প্রমথ। এরপরই প্রমথ সম্পর্কে খোঁজ খবর শুরু করেন মামলাকারী।
তাঁর দাবি, রাজ্য নির্বাচনী কার্যালয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করার পর তিনি জানতে পারেন, বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসার পর ২০১৪ সাল নাগাদ দীনবন্ধু নামে এক ব্যক্তিকে বাবা সাজিয়ে প্রমথ সিংহ ভোটার তালিকায় নাম তোলেন। পরে বাবার নাম সংশোধন করেন। এবার তাঁর ভোটার কার্ডের সূত্রে একে একে তাঁর পরিবারের সকলেই ভোটার তালিকায় নাম তোলেন ও রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোটার হয়ে যান। অভিযোগ, পরবর্তীতে সেই ‘ভুয়ো’ ভোটার কার্ড ও অন্য তথ্য দাখিল করে কলকাতা পুলিসে চাকরিও পেয়ে গিয়েছেন সুতপা।
এই বিষয়টি জানার পরই ভোটার তালিকার যাবতীয় তথ্য-সহ জেলা নির্বাচনী কার্যালয় থেকে শুরু করে পুলিস সুপার সহ একাধিক জায়গায় অভিযোগ জানান শুভঙ্কর। পরে শুভঙ্করকে একের পর মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। এবং গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন রেল কর্মী শুভঙ্কর।
ঘটনার বাধ্য হয়ে শেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে যাবতীয় বৃত্তান্ত তুলে ধরেন শুভঙ্করের আইনজীবী রাজা বিশ্বাস ও অভিজিৎ সরকার। প্রমথ, সুতপা সহ তাঁর গোটা পরিবারকে মামলায় পক্ষভুক্ত করা হলেও, তাদের তরফে কোনও আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত ছিলেন না। গোটা বৃত্তান্ত শোনার পর বিচারপতি সরকার নির্দেশে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবেন কলকাতার পুলিস কমিশনার। যাবতীয় নথি যাচাই করে সবপক্ষের বক্তব্য শুনে এব্যপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে বিচারপতির নির্দেশ, অভিযুক্তদের পরিচিতি প্রমাণের শেষ সুযোগ দিয়ে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়টি চার মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।