সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য এনসি-জেসিএম সচিবের

7192
DA News মহার্ঘ ভাতা

নয়াদিল্লি: অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার কারণে সারাদেশে ১ কোটির বেশি সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীর বেতন-পেনশন বাড়তে পারে। এই খবরের পর অনেকেই জানতে চান নতুন বেতন কাঠামোতে তাদের মাসিক আয় কত বাড়বে। অষ্টম বেতন কমিশনে (8th Pay Commission) ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর কমপক্ষে ২.৫৭ হওয়া উচিত, যা সপ্তম বেতন কমিশনে ব্যবহৃত হয়েছিল, অথবা এর চেয়েও বেশি হতে পারে—এমনটাই মনে করেন ন্যাশনাল কাউন্সিল-জয়েন্ট কনসালটেটিভ মেশিনারি (এনসি-জেসিএম)-এর সচিব (স্টাফ সাইড) শিব গোপাল মিশ্র। 

পড়ুন:  পশ্চিমবঙ্গ: তবে কি মার্চেই সুপ্রিম কোর্টে বাংলার ডিএ মামলার ফয়সালা? শুনানির দিনক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ কর্মীদের

তিনি বলেন, “আমি এখনও বিশ্বাস করি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর কমপক্ষে ২.৫৭ বা তার বেশি হওয়া উচিত। যদি অষ্টম বেতন কমিশন ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর গ্রহণ করে, তবে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতনে ১৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি হবে বলে। ২০১৬ সালে সপ্তম বেতন কমিশন ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর প্রস্তাব করেছিল, যার ফলে ন্যূনতম বেতন ৭,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮,০০০ টাকা হয়েছিল। এই বৃদ্ধি কেন্দ্রীয় কর্মীদের জন্য উল্লেখযোগ্য স্বস্তি এনেছিল।”

উচ্চতর ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের দাবির পেছনে যুক্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিশ্র বলেন, সপ্তম বেতন কমিশন ১৯৫৭ সালের ১৫তম ভারতীয় শ্রম সম্মেলন (আইএলসি) রেজোলিউশন এবং আয়ক্রয়েডের ন্যূনতম জীবনযাত্রার মজুরি সূত্রের ভিত্তিতে ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর নির্ধারণ করেছিল। তবে, এই পদ্ধতিগুলো এখন পুরোনো হয়ে গেছে এবং আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যয় যেমন ইন্টারনেট, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা এতে প্রতিফলিত হয় না। আমাদের বর্তমান সময়ের বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে। জীবনযাত্রার খরচ অনেক বেড়েছে। 

পড়ুন:  পশ্চিমবঙ্গ: এরাজ্যের সরকারি কর্মীদের কত শতাংশ ডিএ দেওয়া হবে? বাজেট অধিবেশনের আগে অঙ্ক কষছে অর্থ দফতর

মিশ্র আরও বলেন, “বয়স্ক পিতামাতার যত্ন নেওয়া এখন নৈতিক এবং আইনি দায়িত্ব। ২০২২ সালের মেনটেন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অফ প্যারেন্টস অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন অ্যাক্ট অনুযায়ী এটি বাধ্যতামূলক। তাই পরিবারের ইউনিট তিনটির পরিবর্তে পাঁচটি হিসেবে গণনা করা উচিত।” 

তবে, প্রাক্তন অর্থ সচিব সুভাষ গর্গ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই দাবিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “২.৮৬ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর চাওয়া মানে চাঁদের দাবি করা। এটি সম্ভবত ১.৯২-এর কাছাকাছি হবে।” গর্গের মতে, সরকারের আর্থিক সক্ষমতা এবং বাস্তবতা বিবেচনায় এই ধরনের উচ্চ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর সম্ভব নয়। তাঁর এই মন্তব্য মিশ্রের দাবির সঙ্গে একটি বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।