SSC: আমরা কী করতে পারি? ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব বলে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের

23127
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না

নিউজ ডেস্ক: আজ সুপ্রিম কোর্টে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি হল। এর আগে ২৮ জানুয়ারির শুনানিতে গোটা প্যানেবই বাতিল করার আবেদন জানান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এদিন, সোমবার SSC-র ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে।

২৬ হাজার চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলায় আসল ওএমআর শিট না থাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। তিনি জানান, আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে আদালত কী করতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির। তবে তবে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সোমবার শীর্ষ আদালতে জানান, যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব। যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব নয় বলে যে যুক্তি উঠে এসেছে, তার বিরোধিতা করেন সিঙ্ঘভি।

তবে এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি খন্নার এজলাসে এ কথা জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় হাই কোর্টের রায়কেই সমর্থন করছে তদন্তকারী সংস্থা। সোমবার এই মামলায় প্রধান বিচারপতি সিবিআইয়ের বক্তব্য জানতে চান। তখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী বলেন, “নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি হয়েছে। হাই কোর্টের রায় যথার্থ। ওই রায়ই বহাল রাখা হোক।”

সিবিআইয়ের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি খন্না জানান, সমস্যা হল আসল ওএমআর শিট নেই। সে ক্ষেত্রে কোন ওএমআর শিটকে আসল বলে ধরে নেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন) না কি পঙ্কজ বনসলের সংস্থার কাছে তথ্য রয়েছে? অনেক সন্দেহ রয়েছে! পঙ্কজ বনসলের সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে সন্দেহ আছে। আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় আমরা কী করতে পারি?” চারটি বিভাগে কত নিয়োগ হয়েছিল, সে বিষয়েও সিবিআই এবং এসএসসির কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি।

পড়ুন:  SSC CHSL 2024: শূন্যপদের তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে, 3954টি পদ পূরণ করবে এসএসসি

কত জন যোগ্য এবং অযোগ্যকে বাছাই করা হয়েছে, তা নিয়েও এসএসসিকে প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি। তাতে কমিশনের আইনজীবী জানান, ‘র‌্যাঙ্ক জাম্প’ এবং প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগের তথ্য তাঁদের কাছে রয়েছে। কিন্তু ওএমআর শিট কারচুপির তথ্য কমিশনের কাছে নেই। সে কথা শুনে প্রধান বিচারপতি খন্না বলেন, “সমস্যা তো এখানেই। বনসলের সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে আপনাদের তথ্য মিলিয়ে দেখেননি। আপনারা বলতে পারছেন না কোনটি আসল তথ্য। কিন্তু সিবিআইয়ের তথ্য গ্রহণ করলে বলতে হবে বনসলের তথ্য আসল। উল্টো দিকে অন্য পক্ষ বলছেন, তাঁদের নম্বর আসল। বনসলের তথ্য সঠিক নয়।”

পড়ুন:  দীর্ঘ অপেক্ষার পর কর্মচারীদের ২৪,০০০ টাকা ভাতা বাড়াল পশ্চিমবঙ্গ! প্রথমেই মিলবে বাড়তি ৪,০০০ টাকা

গত ১৫ জানুয়ারি, গ্রুপ D এবং নবম-দশমের শিক্ষকদের আইনজীবী মুকুল রোহাতগি সওয়াল করেন, হাইকোর্টের রায়ে যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্য়ে যাঁরা নির্দোষ, তাঁরা তো সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।  তখন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, আমরা এটা বলে আসছি যে, যদি যোগ্য়-অযোগ্য় পৃথক করা সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই করা উচিত। কিন্তু, যদি আলাদা করা সম্ভব না হয়, তাহলে পুরোটাই (প্যানেল) উড়িয়ে দেওয়া হবে।

পড়ুন:  পাওয়া গেছে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম! শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি

তবে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, কিছু ঝামেলা সহ্য করে শুধুমাত্র যারা পরীক্ষায় বসেছিলেন তাঁদের সুযোগ দিতে হবে। সিপিএমের আইনজীবী সাংসদের অবস্থানের তীব্র সমালোচনায় সরব হন চাকরিরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যোগ্য-অযোগ্যদের আলাদা করার প্রশ্নে একাধিকবার পিছিয়েছে চাকরি বাতিল মামলার শুনানি।