Homeপশ্চিমবঙ্গবিস্ফোরক তথ্য, গোপন কথোপকথনের সামনে এল! পার্থকে নিয়ে এই খবর জানলে অবাক...

বিস্ফোরক তথ্য, গোপন কথোপকথনের সামনে এল! পার্থকে নিয়ে এই খবর জানলে অবাক হয়ে যাবেন

নিউজ ডেস্ক: ২০১৭ সালে তৃণমূল নেতা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (কালীঘাটের কাকু), কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে হওয়া এক গোপন কথোপকথনের অডিও প্রতিলিপি হাতে পেয়েছে আনন্দবাজার ডট কম। এই কথোপকথনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে “লোভী” আখ্যা দিয়ে তাঁর আর্থিক দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ উত্থাপন করেছেন সুজয়কৃষ্ণ। সিবিআইয়ের তদন্তে এই অডিওটিই এখন মূল প্রমাণ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

‘২০ কোটিতেই চোখে ঠুলি’

সুজয়কৃষ্ণের বক্তব্য অনুযায়ী, “পার্থদা লোভী লোক। তাঁকে ২০ কোটি টাকা দিলেই তিনি চোখে ঠুলি পরবেন। বলবেন, চোখের অপারেশনে সিঙ্গাপুর যাচ্ছি।” ১৯৮২ সাল থেকে পার্থের সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণের যোগাযোগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি দাবি করেন, পার্থের স্ত্রী এক সময় তাঁর চেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী ছিলেন। সুজয়কৃষ্ণের দেওয়া বেহালার ফ্ল্যাট ও অফিসের কথাও উল্লেখ করা হয় আলোচনায়।

হার না দুলের দ্বন্দ্ব

পার্থের স্ত্রীকে একটি হার পাঠানোর পর পার্থের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে সুজয়কৃষ্ণ মজা করে বলেন, “পার্থ জিজ্ঞেস করল, ‘দুলটা দিসনি তো?’ এমনকি পার্থকে একটি গিনি পিগ উপহার দিলেও তিনি আরেকটি চেয়ে বসেন বলে অভিযোগ করেন সুজয়।

পড়ুন:  BIG NEWS: হাসপাতালেই হার্ট অ্যাটাক রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের

‘বেচা’র মাধ্যমে মাল সরবরাহ

হুগলির ‘বেচা’ নামক এক ব্যক্তির মাধ্যমে পার্থের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ সামগ্রী পৌঁছানোর কথাও অডিওতে উঠে এসেছে। সুজয়কৃষ্ণের দাবি, “পার্থের বয়স ৬৫ হলে জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত সব মাল খরচ করলেও ফুরাতো না!”

চাকরি বাণিজ্যে পোস্টিংয়ের দাম

কুন্তল ঘোষের বক্তব্য অনুযায়ী, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে চেয়ারম্যানরা প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে পোস্টিংয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা আদায় করতেন। ৩৮ জন প্রার্থীর ক্ষেত্রে এই অর্থ দাঁড়ায় ১৯ লক্ষ টাকা।

পড়ুন:  ছুটির তালিকা ঘোষণার মধ্যেই বাংলার সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে এল বিশেষ বার্তা

‘পার্থদাকে সামলে নেবে মানিক’

চাকরিপ্রার্থীদের বিষয়ে পার্থকে সামলে নেবেন মানিক ভট্টাচার্য। তাঁর সেই ক্ষমতা আছে। কুন্তল, শান্তনুদের সঙ্গে আলোচনার সময়ে এ কথা জানিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। পার্থ যাতে টাকার বিষয়ে কোথাও মুখ না-খোলেন, অভিষেক যেন এ বিষয়ে কিছু না-জানতে পারেন, তা নিশ্চিত করার ভার মানিককেই দেওয়া হবে, ঠিক হয়েছিল ওই আলোচনায়। সুজয়কৃষ্ণ বলেছিলেন, ‘‘মানিক ভট্টাচার্য পার্থদাকে সামলে নেবেন। মানিক ভট্টাচার্যের সেই ক্ষমতা আছে। উনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ডিল করবেন। পার্থদা, গুরু ২০ কোটি দেব। মুখে কুলুপ আঁটো। কত হচ্ছে, অভিষেককে বলবে না। এ বার ২০০০-এর জায়গায় ২৫০০ করে বাকি ৫০০ মানিক ভট্টাচার্য নিয়ে নিক। আমি কি বোঝাতে পারলাম?’’

পড়ুন:  কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ কতটা ফারাক! DA নিয়ে মমতাকে পাল্টা শুভেন্দু

আদালতকে ফাঁকি দেওয়ার কৌশল

চাকরিপ্রার্থীদের বৈধতা দিতে আদালতে মামলা ও আরটিআইয়ের কৌশলের কথাও স্বীকার করা হয়েছে আলোচনায়। কুন্তল ব্যাখ্যা করেন, “প্রশিক্ষিতদের তালিকায় নাম যোগ করে আদালতের নির্দেশে নিয়োগ দেওয়া হয়।”

সিবিআইয়ের তদন্ত ও অভিষেকের প্রতিক্রিয়া

সুজয়কৃষ্ণ ও কুন্তল জামিনে মুক্ত হলেও শান্তনু এখনও কারাগারে। অডিওর সত্যতা যাচাই করতে কণ্ঠস্বরের নমুনা ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী এই অভিযোগকে “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” আখ্যা দিয়েছেন। অভিষেক নিজেও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

বর্তমান অবস্থা 

তৃতীয় চার্জশিটে অভিষেকের নাম উল্লেখের পর তৃণমূল নেতৃত্ব সিবিআইয়ের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছে। তবে, তদন্তের ফলাফলই এখন সকলের চোখ।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments