SSC শিক্ষক নিয়োগ: সদ্য প্রকাশিত আপার প্রাইমারি স্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়া কলকাতা হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী শুরু করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। মোট ১৪,৩৩৯ টি শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করলেও বহু স্কুলের নাম না থাকায় তারা সমস্যায় পড়েছে। এই বিষয়ে তৎপরতার সাথে শিক্ষক সংগঠন, “অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন” এর পক্ষ থেকে গত ০১.১০.২০২৪ তারিখে West Bengal Central Schoolo Service Commission(WBCSSC) ওয়েবসাইটে আপার প্রাইমারি স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য (1st Phase Counselling) বাংলা মিডিয়ামের স্কুল, সাবজেক্ট ও ক্যাটেগরী অনুযায়ী ভেকেন্সি লিস্ট প্রকাশিত হয়েছ, সেই লিস্টে কিছু বিষয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য স্কুল শিক্ষা কমিশনার ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বহু সংখ্যক স্কুল থেকে এই বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আপার প্রাইমারি কাউন্সেলিংয়ের পূর্বে এসএসসি প্রকাশিত স্কুল লিস্টে বাদ পড়েছে বহু। এই নিয়ে স্কুল শিক্ষা কমিশনার ও এসএসসি চেয়ারম্যানকে দাবিপত্র পেশ করা হয়েছে।
(১) বহু সংখ্যক স্কুলে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে VACANCY থাকলেও এবং স্কুল শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশানুযায়ী অনলাইন ও অফলাইনে বারবার তথ্য জমা দিলেও বর্তমানে WBCSSC দ্বারা সদ্য প্রকাশিত আপার প্রাইমারি লিস্টে স্কুলের নাম নেই।
(২) বহু আপার প্রাইমারি ও জুনিয়র হাইস্কুলের বহু বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় পঠনপাঠন ব্যহত হচ্ছে। ফলস্বরূপ, স্কুলগুলি এই VACANT লিস্টে স্কুলের নাম না থাকায় সমস্যায় পড়েছে।
(৩) Vacancy লিস্টে ক্যাটেগরির Status এ (Gen/SC/ST/OBC/PH) অনেক স্কুলের Category পরিবর্তন হয়েছে দেখাচ্ছে এবং কিছু স্কুলের Subject পরিবর্তনও হয়েছে।
(৪) রাজ্যের বহু সংখ্যক স্কুলগুলিতে আপার প্রাইমারি সেকশনে প্রয়োজনীয় বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক- শিক্ষিকা অবিলম্বে নিয়োগ করে পঠনপাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে ও ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে সমস্ত বিষয়ে স্থায়ী শিক্ষক পায় সেবিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে।
(৫)পূর্বে আপার প্রাইমারি নিয়োগের জন্য কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া চলাকালীন বহু ক্যান্ডিডেট যে স্কুল নির্বাচন করেছিল সেই সকল স্কুলগুলির মধ্যে অনেকগুলির নাম এই লিস্টে নেই।
(৬) বর্তমান WBCSSC নোটিফিকেশন অনুযায়ী, আপার প্রাইমারি নিয়োগের পর স্কুলগুলিতে সমস্ত স্তরে (UP/NORMAL /HS) VACANCY ডিটেইলস প্রকাশ করতে হবে।
শোক সংবাদ: মাত্র ৩৯ বছর বয়সে অসময়ে চলে গেলেন স্কুল শিক্ষিকা, শোকের ছায়া নেমেছে গোটা এলাকায়
সংগঠন এর রাজ্য সভাপতি মনোজ কুমার মন্ডল বলেন, অনলাইনে – উৎসশ্রী ও স্যালারি পোর্টাল মাধ্যমে বারবার বিষয় ও পোস্ট অনুযায়ী টিচারদের ভেকেন্সি স্কুল শিক্ষা দপ্তর সংগ্রহ করার পরেও আপার প্রাইমারি কাউন্সিলিং এর আগে এসএসসি মাধ্যমে প্রকাশিত স্কুল লিস্টে বহু সংখ্যক স্কুলের নাম নেই, এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক ও অযৌক্তিক। অপরিকল্পিতভাবে, অদক্ষতার সাথে এই লিস্ট তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষক না পেয়ে বেশিরভাগ স্কুলই সমস্যার মধ্যেই থাকবে। পূর্বের লিস্টে ভেকেন্ট হিসেবে স্কুলের নাম থাকলেও এই লিস্টে কিভাবে নাম লোপ পেলো সেটাই রহস্যজনক। জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক সমস্যা না মেটালে রাজ্যে সেগুলির পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
সংগঠন এর রাজ্য কোষাধ্যক্ষ জয় প্রকাশ দাস এর মতে, “দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ ছিল, অথচ বহু স্কুল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা রিটায়ার্ড হয়েছেন, মারা গেছেন, নতুনভাবে ভ্যাকেন্সি সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু নিয়োগের জন্য যে ভ্যাকেন্সি লিস্ট বেরিয়েছে তাতে বেশিরভাগ জুনিয়র হাই স্কুল গুলোর নাম নেই। এমনিতেই জুনিয়র হাই স্কুল গুলোতে পরিকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষকের অভাবে চরম দৈন্য দশায় ভুগছে, আগামী দিনে সেই স্কুল গুলিকে পরিকল্পনামাফিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে ঠেলে দেওয়া হলো। এসএসসি উচিত নতুন ভ্যাকেন্সি গুলোকে ভেকেন্সি লিস্টের মধ্যে তৎপরতার সাথে যুক্ত করা।” জয় প্রকাশ দাস মহাশয়ের স্কুলেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর ডিআইকে তিনবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। দুটি মাত্র শিক্ষক নিয়ে ১০ বছর ধরে স্কুল চলছে।
সমস্যায় পড়েছে হুগলির খামাকুল-১ ব্লকের পশ্চিম ঘোষপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ, প্রধান শিক্ষক দেবাশীষ ঘোষ বলেন, ৭ জন শিক্ষক নেই, তার মধ্যে চারজন বিজ্ঞানের শিক্ষক। এবারও শিক্ষক পাওয়া না গেলে আপার প্রাইমারিতে বিজ্ঞানের ক্লাস চালানো সম্ভব হবে না। মঙ্গলবার রাত থেকেই এডিআই, ডিআই থেকে স্কুল শিক্ষা কমিশনার, শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছেন।