বড় খবর: SSC কাণ্ডে বিকাশ ভট্টাচার্যের উপর রেগে আগুন SFI, কেন জেনেনিন

4235
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য

নিউজ ডেস্ক: এবার আইনজীবি তথা বাম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যের উপর রেগে আগুন হল বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সুপ্রিম কোর্টে এসএসসির (SSC) প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে বিকাশের সওয়ালে অখুশি SFI। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে প্রশ্ন তুললেন।

সুপ্রিম কোর্টে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে বিকাশ ভট্টাচার্যের সওয়ালের বিরোধিতা করল এসএফআই। গোটা প্যানেল বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছেন বিকাশ ভট্টাচার্য। তিনি মনে করেন, যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক করা সম্ভব নয়। ফের পরীক্ষা নেওযার দাবি জানিয়েছেন সিপিএমের সাংসদ-আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। 

তবে বিকাশের এই সওয়ালের বিরোধিতায় বামেদের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। “যোগ্যদের যাতে চাকরি না যায় সেটা দেখতে হবে। অযোগ্যদের আলাদা করতেই হবে। যোগ্যরা ফের কেন পরীক্ষা দেবেন?” প্রশ্ন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দের। তবে এসএফআইয়ের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিকাশ ভট্টাচার্য।

SFI-এর রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, বিকাশবাবু একজন স্বনামধন্য আইনজীবী। উনি আইনজীবীর জায়গা থেকে ওঁর যা মনোভাব তা রেখেছেন। আমাদের এটাই মনোভাব, যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করতে হবে। এই আলাদা করার দায় সরকারের। সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। বিচারব্যবস্থার এই দায় নয়। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার দায় বিচারব্যবস্থার নয়। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার দায় সরকারের। তদন্ত-প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বেশ কিছুটা অগ্রসর হয়েছিল এইদিকে যে, কারা অযোগ্য সেই লিস্ট করার প্রক্রিয়া। তাহলে সেই প্রক্রিয়াটা কেন থেমে গেল? আমাদের পরিষ্কার স্ট্যান্ড, যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করতে হবে। যদি রি-এক্সামিন করতে হয় তাহলে অযোগ্য মনে করা হয়েছে যাঁদের, যাঁদের অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের রি-এক্সামিন করো। যাঁরা যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়েছেন তাঁরা কেন রি-এক্সামিনড হবেন?

যদিও SFI-এর দাবিকেই গুরুত্বই দিতে নারাজ বিকাশরঞ্জন। তিনি বলছেন, “এসএফআইয়ের সিদ্ধান্ত। ওরা ওদের মতো করে করেছে। গোটা কলকাতা হাইকোর্ট প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে। আজ হাইকোর্টের রায়কেই অন্য পক্ষ আবেদন করেছে, তার বিরুদ্ধে আমাকে হাইকোর্টের রায়ের পক্ষেই সওয়াল করতে হবে। দুর্নীতি যদি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হয়, সেখানে ভালো-মন্দ বাছাই করা যায় না। এটাই আমার বক্তব্য ছিল। এসএফআই কী বলছে, এবিটিএ কী বলছে এটা কোনও বিচার্য্য বিষয় নয়। আমি নৈতিকভাবে মনে করি, দুর্নীতিমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যা সৃষ্টি হয়েছে তা বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত। আইনগত দিক থেকে তো বটেই। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি হলে সেখানে কোনও রকম ক্ষমার জায়গা নেই। সুপ্রিম কোর্টের জাজমেন্টও আছে। লড়াইটা মূলত হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাহলে কি কিছু সুবিধা পেলে আমাকে দুর্নীতির সঙ্গে আপোস করতে হবে ? সেই নীতিতে আমি বিশ্বাস করি না। এটা কে ঠিক করবে যে সঠিক পদ্ধতি মেনে পেয়েছেন ? নির্ণয়ের মানটা কী হবে ? এমনও দেখা গেছে, পরীক্ষা না দিয়ে পেয়েছেন। এরকম আরও কত লুকিয়ে আছে কে জানে !” 

পড়ুন:  SSC শিক্ষক নিয়োগ মামলা: চাকরিপ্রার্থীদের বিরোধিতা বিকাশের! আদালত এই নির্দেশ দিল

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার এসএসসি মামলার দু’ঘণ্টার শুনানির মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা বলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি এবং মূল মামলাকারীদের অন্য আইনজীবীদের তরফে গোটা প্যানেল বাতিলের জন্য জোরালো সওয়াল করা হয়। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, বাগ কমিটির রিপোর্ট, বিভিন্ন সময়ে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য, এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও সিবিআইয়ের দায়ের করা হলফনামা উদ্ধৃত করে দাবি করা হয় যে, কিছুতেই যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথকীকরণ সম্ভব নয়। আইনজীবীদের বক্তব্য, একটি বাছাই করতে গেলে অন্যটি নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। আদালত জানতে চায়, তা হলে সমস্যার সমাধানে কী করা যেতে পারে? 

পড়ুন:  এসএসসি: বঞ্চিত এবং‌ যোগ্যদের পাশে থাকা এবং ২৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে যা জানালেন ব্রাত্য বসু

এই সময় বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, সেক্ষেত্রে বয়সের সময়সীমা সরিয়ে দিয়ে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হোক। সবাই নন, যে ১১ লাখ প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের পুনরায় পরীক্ষায় বসানো হোক। আইনজীবীর এই নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ঘিরেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।