কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিণতিতে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ২০১৬ সালের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে বাতিল হয়েছিল সেই প্যানেল। এরপর দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এবার নতুন করে চলতি বছরের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ইতিমধ্যেই পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেছে, চলতি মাসেই বিজ্ঞপ্তি জারির সম্ভাবনা রয়েছে।
কী বদল হতে পারে নিয়োগে?
শিক্ষাদপ্তর সূত্রে খবর, এবার পরীক্ষার পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনা হতে পারে। পুরনো নিয়মে ওএমআর শিটের পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের কার্বন পেপার দেওয়া হবে, যার প্রতিলিপি তাঁরা ফেরত পাবেন। সুবিধার জন্য ওএমআর শিট সংরক্ষণের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া, নিয়োগ প্যানেলের মেয়াদ এক বছর থেকে বাড়িয়ে ৬ মাস করা হতে পারে। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রেও নতুন নিয়ম চালু হতে পারে, যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
প্রতিবাদে চাকরিহারাদের বিক্ষোভ
শীর্ষ আদালতের রায়ে চাকরি হারানো কর্মীদের একটি বড় অংশ নতুন করে পরীক্ষা দিতে অনিচ্ছুক। ইতিমধ্যেই বিকাশ ভবনের সামনে তাঁদের টানা অবস্থান ও বিক্ষোভ চলছে। যদিও শিক্ষাদপ্তরের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার কোনও উপায় নেই। ফলে, এসএসসি-কে বাধ্য হয়েই নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাতে হবে।
কে পাবেন সুযোগ?
২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের পর গত ৭ বছর ধরে এই নিয়ে আইনি ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছিল। শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে শিক্ষকরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে পারবেন ও বেতন পাবেন। তবে অশিক্ষক কর্মীরা এখনই চাকরি হারিয়েছেন। নতুন নিয়োগে কতজন পূর্ববর্তী আবেদনকারী অংশ নেবেন, তা এখনই স্পষ্ট নয়। শিক্ষাদপ্তর ও এসএসসি সূত্রে জানানো হয়েছে, “সমস্ত প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে।”
পটভূমি
২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হলে গোটা প্যানেল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর থেকেই চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহালের দাবিতে চলেছে আন্দোলন। তবে আদালতের কঠোর রায়ের পর এবার নতুন করে নিয়োগ ছাড়া কোনও পথ খোলা নেই বলে জানিয়েছে রাজ্য।