SSC মামলা, সুপ্রিম কোর্ট: ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলমান মামলার মধ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিমূলক ছিল এবং এই প্রক্রিয়া বাতিল করে ফের পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।
“গোটা প্রক্রিয়াটিই দুর্নীতিমূলক”
বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিমূলক বলে চিহ্নিত হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ, বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নেতৃত্বে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার গোটা প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত দীর্ঘদিন ধরে শুনানি শেষে সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শুনেছে এবং স্পষ্ট জানিয়েছে যে প্রক্রিয়াটি দূর্নীতিগ্রস্ত।”
“দুর্নীতির ফসল থেকে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়”
আইনজীবী আরও বলেন, “যে প্রক্রিয়ার উৎপত্তি দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছে, তার ফলাফল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে যারা প্রকৃত যোগ্য, তাদের নতুন পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
বিজেপির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বিকাশবাবু আরও বলেন, “যোগ্য প্রার্থীদের একাংশ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দেখা করেছেন। কিন্তু তিনি কী চাইছেন? দুর্নীতিমূলক প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সুনীতি প্রতিষ্ঠা হবে, নাকি বিজেপি শাসিত রাজ্যে হওয়া দুর্নীতিগুলোর মতো এই প্রক্রিয়াটিকেও বাঁচানোর চেষ্টা চলছে? স্পষ্ট কথা বলা উচিত। দুর্নীতিমূলক প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন পরীক্ষা নেওয়া হোক।”
সুপ্রিম কোর্টে শুনানি
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ বাতিল করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে মামলাটি নিয়ে শুনানি চলছে। বিকাশবাবু বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট ইতিপূর্বে বহু রায় দিয়েছে, যেখানে দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলো বাতিল হয়েছে। আদালতও জানতে চেয়েছে, কে টোকাটুকি করেছে আর কে করেনি, তা নির্ধারণ করা কীভাবে সম্ভব?”
প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় আছেন প্রার্থীরা। নতুন করে পরীক্ষা হলে যোগ্যরা চাকরি ফিরে পাবে, কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হলে প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হতে পারে। আদালতের পরবর্তী শুনানিতে এই জটিলতার সমাধান হবে কি না, তা নিয়েই এখন নজর সবার।