কলকাতা, ২২ এপ্রিল ২০২৫: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্কুল শিক্ষা অধিদপ্তর রাজ্যের সকল জেলার স্কুল পরিদর্শকদের কাছে একটি জরুরি মেমো জারি করেছে। এতে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক দুটি আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল ও ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট SLST ২০১৬-এর অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের চাকরি সংক্রান্ত মামলার রায় দিয়েছে।
মূল নির্দেশনা
সুপ্রিম কোর্টের ১৭ এপ্রিলের আদেশ অনুযায়ী, SLST ২০১৬-এর মাধ্যমে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগপ্রাপ্ত সেই সব সহকারী শিক্ষক, যাদের বিরুদ্ধে কোনও অসাধুতা বা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাদের চাকরি ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বহাল রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এটি শর্তসাপেক্ষ, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া এই সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এ সংক্রান্ত তালিকা পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) ইতিমধ্যে জেলা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে।
মামলার পটভূমি
বৈশাখী ভট্টাচার্য (চট্টোপাধ্যায়) ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিশেষ অনুমতি আবেদন (SLP) এবং সংশ্লিষ্ট নাগরিক আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্ত নেয়। ৩ এপ্রিল প্রথম মামলাটির নিষ্পত্তি হয়, এরপর ১৭ এপ্রিল মিসলেনিয়াস আবেদন নিষ্পত্তির মাধ্যমে নির্দেশনা জারি করা হয়।
পরবর্তী পদক্ষেপ
স্কুল শিক্ষা কমিশনার এই মেমোয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণের কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া রাজ্যের স্কুল শিক্ষা বিভাগের প্রধান সচিব, মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি এবং WBSSC-এর চেয়ারম্যানকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জরুরি বাস্তবায়ন
মেমোয় জোর দেওয়া হয়েছে, আদেশ অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এই নির্দেশনার মাধ্যমে আইনি জটিলতার মধ্যেও শিক্ষকদের চাকরি স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে মত অনেকেরই।
এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “ডিআইদের উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা পাঠালেও বিদ্যালয় স্তরে তা এখনো আসেনি। পরিষ্কারভাবে টেনটেডদের তালিকা বিদ্যালয় গুলোকে পাঠাতে হবে। না হলে বিদ্যালয়ের পক্ষে তা বোঝা সম্ভব নয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় শিক্ষা কর্মীরা অনেকেই আনটেন্টেড হওয়া সত্বেও তাদের বেতন সাবমিট করা যাবে না এটা অত্যন্ত পরিতাপের। পর্ষদের পক্ষ থেকে শিক্ষাকর্মীদের বিষয়টি আদালতে গুরুত্ব দিয়ে আনা হলো না কেন? তাঁদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আদালতে আনা হোক যাতে তাঁদের বেতনও সাবমিট করা যায়। সমস্ত যোগ্যদের স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ে সসম্মানে পুনর্বহালের জন্য এসএসসি ও রাজ্য সরকারের কাছে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।”