নিউজ ডেস্ক: এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস আনা হল! স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘সুপ্রিম’ রায়ের সমালোচনা নিয়ে নোটিশ এল। আত্মদীপ নামক একটি অলাভজনক সংস্থার তরফে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিদ্ধার্থ দত্ত ওই নোটিস জারি করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
এসএসসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা ও জনসমক্ষে রায়ের সমালোচনা করার অভিযোগ আনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এসএসসি মামলায় ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট।
নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের নিয়ে বৈঠকে সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের তুমুল সমালোচনা করে মমতা বলেন, “এই রায়ের পেছনে কোনও খেলা নেই তো? অনেকে আমার বক্তব্য রেকর্ড করে বিচারপতির কাছে পাঠাতে পারেন। আমাকে জেলে ভরার জন্য। রায়ের নেপথ্যে অন্য কোনও খেলা নেই তো। কে খেলাটা খেলল,সুপ্রিম কোর্ট জানাতে পারেনি, কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য। আইনে বলা রয়েছে, ১০ হাজার অপরাধী সাজা পেয়ে যাক, এক জন নিরপরাধও যেন সাজা না পান। সুপ্রিম কোর্টের এর আগের বিচারপতি একটা অর্ডার দিয়েছিলেন। অন্য একজন বিচারপতি সেটা বদলে দিলেন কীভাবে?”
বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দাবি করে মমতা বলেন, “বড়সড় পরিকল্পনা চলছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের শিক্ষকরাই উচ্চশিক্ষার কাণ্ডারী। তাদের অনেকে পরীক্ষার খাতা দেখছেন, তাদের অনেকে সোনার পদকপ্রাপ্ত। তাদের সকলকে চোর বলা হচ্ছে, সবাইকে অযোগ্য বলা হচ্ছে। আপনাকে কে অধিকার দিয়েছে? আমি বলছি যোগ্য কারোর চাকরি যাবে না। আপনারা স্কুলে কাজ চালিয়ে যান।”
আদালত অবমাননার নোটিসে বলা হয়েছে, শীর্ষ আদালতের বিচার আসনে বসে থাকা ব্যক্তিদের অপমান করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর সুপরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। আত্মদীপের তরফে ওই নোটিসে আইনজীবী সিদ্ধার্থ দত্তের দাবি, ৩ এপ্রিলের রায় মেনে চলতে হবে রাজ্যকে। রায় না মানতে জনতার উদ্দেশ্যে প্ররোচনামূলক মন্তব্য রাখা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের কাছে মমতাকে নিঃশর্ত ক্ষমাও চাইতে হবে। নোটিসের দাবি না মানা হলে আইনত অ্যাকশন নেওয়া হবে বলেও বলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস নিয়ে তৃনমূল নেতা কুণাল ঘোষ সোস্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস দিলেন এক আইনজীবী।
1) SCর রায়ের চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে চাকরিসুরক্ষার চেষ্টা করছেন, তাতে জটিলতা তৈরি করে প্রক্রিয়ার গতি কমানোর চক্রান্ত। চাকরিহারারা কী চান? মুখ্যমন্ত্রীর চেষ্টা সফল হোক, আপনাদের চাকরি বাঁচুক; নাকি এসব আইনি জট পাকানোর চক্রান্তকারীরা জটিলতা বাড়াক। অবস্থান নিন আপনারা।
2) রামবাম ভোটে পারে না, কোর্টে জট পাকায়।
3) মুখ্যমন্ত্রী বিচারব্যবস্থায় সম্পূর্ণ আস্থা রাখেন। বিচারপতিদের সম্মান দেন। কিন্তু কোনো রায়ে ন্যায়বিচার না হলে বা বহু মানুষের ক্ষতি হলে, সেই অংশ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করে পুনর্বিবেচনার কথা বলেন। এর সঙ্গে আদালত অবমাননার কোনো সম্পর্ক নেই। মনে রাখবেন, বিচারপতি চাকরি ছেড়ে বিজেপির সাংসদ হতে গেলেও সাধারণ মানুষের চোখে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।”