নিউজ ডেস্ক: আরও বিপাকে পড়তে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। নতুন পরীক্ষায় নম্বর বিভাজনের সিদ্ধান্ত কার? স্কুল সার্ভিস কমিশনকে প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনের। SSC-র নতুন পরীক্ষার ‘বিধি’ চ্যালেঞ্জ মামলায় কমিশনের কাছে নথি তলব করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা এসএসসি’র হলফনামা নথি তলব আদালতের। সোমবার ওই নথি তলব বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের। নতুন পরীক্ষায় ‘টিচিং এক্সপেরিয়েন্স’ নিয়ে কড়া মন্তব্য ডিভিশন বেঞ্চের।
বিচারপতি সৌমেন সেনে বলেন, ”আদালতের বিবেচনা সমস্যাটি সীমিত। এসএসসি কি শূন্যপদের সংখ্যা বাড়াতে পারে? অতিরিক্ত শূন্যপদের সংখ্যা যোগ করতে পারে? ২০১৬ সালের নিয়ম মানলে তার মধ্যেই যোগ্যতামান নির্দিষ্ট? পূর্বের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে গেলে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সকলের অভিজ্ঞতাই শূন্য হয়ে যায়। তাই যদি পূর্বের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা (past teaching experience) গ্রহণ করি, যা ২০১৬ সালে ছিল না।”
বিচারপতি আরও বলেন, ”তাহলে আদালতকে বলতে হয়, ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র আনটেন্ডেডদের এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য সীমাবদ্ধ সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে SSC। সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র বয়সের ছাড় দিয়েছে। কাজেই টিচিং এক্সপেরিয়েন্স ক্ষেত্রটি ধোঁয়াশাময়।”
যদিও এসএসসি পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলে, ”২০২৫ সালে নতুন নিয়োগ পরীক্ষার জন্য টিচিং অভিজ্ঞতা সংযুক্ত হয়েছে৷ রুল তৈরির অধিকারী রাজ্য। কমিশন শূন্যপদ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তির মধ্য দিয়ে।”
বিচারপতি সেন বলেন, ”এসএসসি ২৬০০০ চাকরি বাতিল মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ২০১৬ নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাতিল হওয়া শূন্যপদ ২০১৬ নিয়ম মেনেই নিয়োগ করতে হবে। নতুন শূন্যপদ যোগ করে নিয়োগ করলে তা হবে নতুন ২০২৫ সালের নিয়ম মেনে।”
নবম দশমের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিধি বা নিয়ম কী? মামলাকারীদের প্রশ্ন করে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের।
মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, ফিরদৌস সামিম, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত দের সওয়াল, সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছে ২০১৬ ঘোষিত শূন্য পদে নিয়োগ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায় পর্যবেক্ষণকে মানা উচিত এসএসসি-র। ২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং ২০২৫ এর নতুন শূন্য পদের প্রক্রিয়াকে এভাবে সংযুক্ত করা যায় না। ২০১৬ এর নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ২০১৬ নিয়ম এবং অন্যান্য বিধি মেনে চলা উচিত। ২০১৬ সকল পরীক্ষার্থীকে এসএসসি-র নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে, কোনও অতিরিক্ত সুবিধা সুযোগ পাবে না শিক্ষকেরা। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বদল আনা হয়েছে বয়স এবং ন্যূনতম যোগ্যতা মার্কসে।
মামলাকারীদের বক্তব্য, স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রয়োজনে আলাদা আলাদা করে পরীক্ষা নিক। একটা 2016 সালের প্রার্থীদের জন্য আর একটা 2025 সালের প্রার্থীদের জন্য। তাহলে 2025 সালের নিয়োগের পরীক্ষায় অযোগ্যদের বসার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না। আগামী 14 জুলাই পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন জানানোর শেষদিন। এই সময়সীমা বাড়ানোরও আর্জি জানিয়েছেন প্রার্থীরা। এসএসসি-র নতুন নিয়োগের বিধি ও বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে রাজ্যের কাছে একগুচ্ছ নথি তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট । আগামী সোমবার সেই সব নথি আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ।