মর্মান্তিক: মৃত্যু চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক সুবল সোরেনের, মানসিক চাপে ছিলেন! ক্ষোভ

1862

শিক্ষকের মৃত্যু: এবার এক অত্যন্ত মর্মান্তিক খবর সামনে এল। মৃত্যু হল স্কুল শিক্ষক সুবল সোরেনের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে ২৬,০০০ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়, সেই তালিকায় ছিলেন ঝাড়গ্রামের সুবল সোরেন। চাকরিহারাদের আন্দোলনেও বারবার দেখা গিয়েছে তাঁকে। শুক্রবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল তাঁর। 

এই মৃত্যু নিয়ে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বছর ৩৫-এর ওই যুবক। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এত ভয়াবহ আকার নিয়েছিল, যে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তাঁর মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন চাকরিহারারা।

কোন অভিযোগে অভিযুক্তহীন ২০১৬ সালের শিক্ষক(ডেবরা ব্লকের বৌলাসিনী হাই স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের যোগ্য শিক্ষক) সুবল সরেন প্রথম থেকেই যোগ্যদের হয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে থেকেছে। চাকরি চলে যাওয়ায় প্রচন্ড মানসিক চাপে গত ১১ই আগস্ট তাঁর স্ট্রোক হয়। ডেবরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। সেখান থেকে কলকাতার আর এন টেগোর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মৃত্যু সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন। আজ ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রারম্ভিক সময়ে সকাল ৮:১৫ তে তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। 

চাকরিসূত্রে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন সুবল। গত ১১ অগস্ট অর্থাৎ সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় সেই ভাড়া বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ঘটনার পর চাকরিহারা শিক্ষকরা একে একে এসে পৌঁছেচ্ছেন হাসপাতালে। পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। সুবলের মৃত্যুর জন্য সরকারকেই দায়ী করছেন তাঁরা।

পড়ুন:  SSC: কাউন্সেলিংয়ের বিষয়ে অনিয়ম হয়নি দাবি এসএসসির, মুখ খুললেন ফিরদৌস শামিম

এই বিষয়ে শিক্ষা অনুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “আমরা মনে করি এই মৃত্যুর জন্য প্রধানতম দায়ী এই রাজ্য সরকার। তাদের দুর্নীতির দায় যোগ্য শিক্ষক শিক্ষা কর্মীদের ঘাড়ে করে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে! এর পাশাপাশি যে ব্যবস্থা নির্দোষ ব্যক্তিদের দোষী সাব্যস্ত করে কাঠগড়ায় দাঁড় করালো তারাও কম দোষী নয়। কোন ঘৃণা, কোন ধিক্কার এঁদের জন্য যথেষ্ট নয়। এই ঘটনার সমস্ত দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। পরিবারের একজনকে চাকরি এবং ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করছি আমরা। পাশাপাশি আমরা আবার দাবি তুলে ধরছি, কোন যোগ্য শিক্ষক শিক্ষাকর্মী যেন চাকরি থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে এ ধরণের বহু ঘটনার আশঙ্কা করছি আমরা। আর একটাও প্রাণ যাতে না যায় তার জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই যোগ্যদের পাশে এসে দাঁড়ান।”