নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কালীঘাটের কাকুর অডিও-য় নাম নিয়ে ‘ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছে সিবিআই’, এমনই দাবি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। আদালত সূত্রে দাবি, চার্জশিটে একটি অডিও ক্লিপের উল্লেখ রয়েছে। যেখানে নাকি পার্থ-মানিকের পাশাপাশি অভিষেকেরও নাম শোনা গিয়েছে। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেকের আইনজীবী।
এরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বুধবার আদালতে ২৮ পাতার চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। তাতে ‘কালীঘাটের কাকু’ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কথোপকথনের উল্লেখ রয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, অডিওতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের নামের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম শোনা গিয়েছে। এই অডিও-র সত্যতা যাচাই করতে সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, চার্জশিটে পার্থ-মানিকের পরিচয়ের উল্লেখ থাকলেও অভিষেকের নামের আগে কোনও পরিচয়ের উল্লেখ নেই। যার ফলে স্পষ্ট হয়নি যে চার্জশিটে উল্লেখ থাকা অভিষেকই তৃণমূলের সাংসদ কি না।
এই নিয়ে অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, “মামলার তদন্তকারী সংস্থা ইডি আমার মক্কেলের (অভিষেক) বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট দাখিল করেনি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের কোনও উপাদানের উপস্থিতিও মেলেনি। তার পরেও তৃতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট আমার মক্কেলকে হয়রানির উদ্দেশ্য ছাড়া আর কিছু নয়। ইডিকে কাজে লাগিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পরে একটি রাজনৈতিক শক্তি সিবিআইয়ের দিকে ঝুঁকেছে। স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করছে। সংশ্লিষ্ট চার্জশিটে প্রমাণের স্পষ্ট অভাব থাকা সত্ত্বেও সন্দেহ (অভিষেক সংক্রান্ত) তৈরি করার একটি মরিয়া প্রচেষ্টা করা হয়েছে।’
এই বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষক কিংকর অধিকারী সোস্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘টিভির পর্দায় বিশেষজ্ঞদের বিতর্ক চলছে, কে সেই জনৈক অভিষেক ব্যানার্জি। চলছে যুক্তি পাল্টা যুক্তির তর্জা। সিবিআই চার্জশিটে পরিচয় লুকিয়ে কেবল নাম উল্লেখ করে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করলো কার ভয়ে? এরা করবে তদন্ত! মানুষ চায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও প্রকৃত দোষীদের কঠোর শাস্তি এবং প্রকৃত বঞ্চিতদের নিয়োগ। তা কি আদৌ করতে দেবে তথাকথিত রাজনৈতিক দলের কাছে ঝুঁটি বাঁধা এই তদন্তকারী সংস্থাগুলি? অভয়া কাণ্ড এর জ্বলন্ত উদাহরণ। নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রকৃত অপরাধীদের ধরার ক্ষেত্রেও সেই একই খেলা চলছে। সবাই উপলব্ধি করতে পারছি নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বা আরজি কর কাণ্ডে কি হয়েছে। কিন্তু অপরাধীর মূল পাণ্ডাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! এই সিআইডি, এই সিবিআই রাজ্য এবং কেন্দ্রের হাতের পুতুল। উঠতে বললে উঠবে, বসতে বললে বসবে। সিবিআই বা সিআইডি কোনভাবেই অযোগ্য একথা বিশ্বাস করি না। আসলে তারা দলগুলির হাতের মুঠোয় বন্দী হয়ে আছে। রঙ্গমঞ্চের নাটক চলছে। আর আমরা আমজনতা সেই নাটক দেখছি। খুব দ্রুত এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। কেবল দলবদলের খেলা দিয়ে একে মোকাবিলা করা যাবে না। একটা গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তৈরি হোক।’