এসএসসি, ব্রাত্য বসু: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। তা নিয়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে গোটা বাংলায়। ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বৃহস্পতিবার বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ বাছাই করা সম্ভব হয়নি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের এসএসসি-র মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁরা চাইলে পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন। এই আবহে আজ মুখ খুললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বঞ্চিত এবং যোগ্যদের পাশে থাকবে রাজ্য সরকার। শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। চাকরিহারাদের অনেকেই শুক্রবার থেকে স্কুলে যাচ্ছেন না। সংবাদমাধ্যমের তরফে ব্রাত্যকে এই কথা জানাতেই শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয় এই তথ্য ঠিক নয়। কাল মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কী করণীয়, তা বলে দিয়েছেন। আমাদের কাছে এমন তথ্য নেই যে, তাঁরা যাচ্ছেন না।” ব্রাত্যকে প্রশ্ন করা হয়, তবে কি চাকরিপ্রার্থীরা স্কুলে যেতে পারেন? উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমি তো এমন কথা বলতে পারি না।” চাকরিহারাদের মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক বার্তার উপর ভরসা রাখারও আর্জি জানান তিনি।
ব্রাত্য বলেন, “আমার দায়িত্ব থেকে বলতে পারি, বঞ্চিত এবং যোগ্য যাঁরা আছেন, মানবিক ও রাজনৈতিক ভাবে তাঁদের পাশে থাকব।” আপনারা যেটা বলছেন এক দলের বেতন ফেরত দেওয়া হবে, এক দলের ফেরত দেওয়া হবে না, এটা তো সুপ্রিম কোর্টের রায় দেখে বলছেন। এটা এসএসসির তথ্যের উপর বলছেন। আপনারা যে বলছেন, এসএসসি যোগ্য-অযোগ্য ভাগ করতে পারেনি, তা নয়। হয়তো বলতে পারেন, কোর্ট সম্পূর্ণত সন্তুষ্ট হয়নি।”
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, আমরা যোগ্য-বঞ্চিত যাঁরা আছেন, তাঁদের পাশে আমরা থাকব। মানবিকভাবে থাকব। রাজনৈতিকভাবেও থাকব। যেটা বলা হচ্ছে টেইন্টেড এবং আনটেইন্টেড, বা একজনের বেতন ফেরত দেওয়া হবে আর একজনের বেতন ফেরত দেওয়া হবে না, এই কথাগুলো তো আমার কথা নয়। এগুলো মহামান্য বিচারপতির রায়ের প্রতিটি পাতায় আছে। আঠাশ নম্বর অণুচ্ছেদে স্পষ্ট করে আছে। অর্থাৎ যা বলা হচ্ছে, তা তো এসএসসির দেওয়া তথ্য থেকেই বলা হয়েছে। অর্থাৎ যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা যে এসএসসি ভাগ করতে পারেনি, সেই কথাটা ঠিক নয়। এটা ঠিক সেই তথ্যে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেননি। কিন্তু নিশ্চিতভাবে প্রধান বিচারপতির রায়ের পর আমরা বুঝতে পারছি। এবং যাঁরা যোগ্য-বঞ্চিত তাঁদের প্রতি একটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি যাতে সব তরফ থেকে বেরোয়, আমি সেই আবেদনও করব। আমি শুধু একটাই কথা বলব, মাননীয় মুখমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখুন।”