SSC বড় খবর: শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে চাকরিহারা শিক্ষকদের বৈঠক শেষ, ফলপ্রসূ হল আলোচনা?

2888
শিক্ষক শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু

নিউজ ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও আশ্বস্থ হতে পারছেন না চাকরিহারারা। ডিআই অফিস অভিযান, রিলে অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চাকরিহারারা। OMR মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবিতে শুক্রবার এসএসসি (SSC) ভবন অভিযান কর্মসূচি এবং বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করলেন তাঁরা।

গোড়া থেকেই এই আলাদা তালিকা প্রকাশের দাবি করেছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। যোগ্য-অযোগ্য বাছাই শুরু SSC-র, ২১ এপ্রিল প্রকাশের সম্ভাবনা, ব্রাত্যর সঙ্গে বৈঠক শেষে দাবি চাকরিহারাদের।

যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে বলে বৈঠক শেষে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।ব্রাত্য বললেন, “সিবিআই-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে। ওঁদের (চাকরিহারাদের) দাবি ছিল তা প্রকাশ করার। যদি আইনত সমস্যা না থাকে তা আমরা প্রকাশ করে দেব। সপ্তাহ দেড়-দুয়েক সময় তাতে লাগতে পারে।”

ব্রাত্য-বৈঠকে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছেন চাকরিহারারা। রিভিউয়ের আবেদন করার আগে কী ধরনের আলোচনা করা হবে, কথা হয়েছে সে সব নিয়েও। চাকরিহারাদের তরফে মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘তবে এখনই আমাদের স্বস্তি নেই। স্বস্তি সেদিনই পাব, যে দিন আমরা আইনি ভাবে জিতে ফিরব।’’

চাকরিহারাদের এক প্রতিনিধি বলেন, “আমাদের আলোচনা হয়েছে। দুটো পার্টে আলোচনা হয়েছে। আমাদের দাবি যেগুলো ছিল সেগুলো নিয়ে। আর একটা আইনি বিষয় নিয়ে। আমরা বলেছিলাম, যোগ্য-অযোগ্য তালিকা সার্টিফাই করে পাবলিশ করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে এসএসসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, যোগ্য-অযোগ্য তালিকা ওরা ইতিমধ্যে তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে। পরের রবিবারের মধ্যে হয়ত হয়ে যেতে পারে। আইনি পরামর্শ নিয়ে সোমবার নাগাদ সেটা পাবলিশ করবেন। পরের সপ্তাহের সোমবার। সম্ভবত ২১ তারিখ।”

পড়ুন:  SSC শিক্ষক নিয়োগ: উচ্চ প্রাথমিকের শূন্যপদ নিয়ে বিভ্রান্তি, বাতিল বহু স্কুল, বিকাশ ভবন সূত্রে যা জানা গেল

তিনি আরও বলেন, “আর ২২ লক্ষ যে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন, তাঁদের ওএমআর পাবলিশের কথাও আমরা বলেছি। ওঁরা বলেছেন, সেটা তো আছে। আইনি পরামর্শ নেবেন। যদি ওঁরা পজিটিভ বার্তা দেন যে কোনও অসুবিধা নেই, তাহলে অবশ্যই সেটাও পাবলিশ করা হবে। যেটা আমরা বলেছিলাম, মিরর ইমেজ। যেটা ওঁরা জানালেন, মিরর ইমেজ তো নেই। কারণ মিরর ইমেজ থাকলে সিবিআই নিশ্চয়ই খুঁজে পেত। যেটা আছে এখন, সেটা অ্যাকর্ডিং টু সিবিআই। মানে, সাবমিটেড বাই সিবিআই। সেই মিরর ইমেজটা আছে। যদি সেটা মনে হয় তাহলে সেটা ওঁরা দেবেন। এই তিনটে দাবি আমাদের ছিল। এই তিনটের উত্তর ওঁরা দিয়েছেন। আর আইনি পরামর্শের ক্ষেত্রে, রিভিউ বা কিউরেটিভ যাই হোক…প্রথমে তো রিভিউ হবে, রিভিউয়ে যাওয়ার আগে কী ধরনের আলোচনা হবে সেটা আমাদের সঙ্গে যেন আলোচনা করেন। একসঙ্গে বসে। সেটায় ওঁরা রাজি হয়েছেন।”

পড়ুন:  SSC: শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ে অনুপস্থিত প্রার্থী বেড়েই চলছে, বড় খবর ওয়েটিং প্রার্থীদের জন্য, দেখেনিন সম্পূর্ণ হিসাব

বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ২২ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ওএম‌আরের প্রতিলিপি প্রকাশ করা হবে। আগামী ২১ তারিখের মধ্যে যোগ্য-অযোগ্যর তালিকাও প্রকাশ্যে আনা হবে। ওএমআরের প্রকৃত মিরর ইমেজ নেই। যদি তা থাকত, তা হলে সিবিআই তা খুঁজে পেত। সিহিআইয়ের কাছে যে প্রতিলিপি আছে, সেটিই প্রকাশ্যে আনা হবে বলেই বলা হয়েছে। তবে রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকের পর চাকরিহারারা জানালেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও এখনই স্বস্তি পাচ্ছেন না তাঁরা। যত ক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের দাবি আদায় না-হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত চলবে আন্দোলন।

এদিন বৈঠকে আগেই উপস্থিত হন এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামাণুজ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে পৌঁছান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ১২ নয়, উপস্থিত ছিলেন চাকরিহারাদের ১৩ জন প্রতিনিধি। তাঁরা OMR মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবি করেন।

পড়ুন:  পশ্চিমবঙ্গ: ডিএ দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ! একি বলছেন এরাজ্যের সরকারি কর্মীরা

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষ হলো চাকরিহারা শিক্ষকদের। বিকাশ ভবন থেকে বেরিয়ে তাঁরা নিজেদের বক্তব্য স্পষ্ট করলেন তাঁরা।

ব্রাত্য বসু চাকরিহারাদের উদ্দেশে বলেন, “অপেক্ষা করুন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সুরাহার জন্য যা যা প্রয়োজন, আইনি পরামর্শ মেনে সব করা হবে।”

বৈঠকে চাকরিহারাদের সব দাবি নিয়ে আলোচনা। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস, আইনি পরামর্শ অনুযায়ী যা যা পদক্ষেপ করা যায়, সেটা করবেন। ২২ লক্ষ ওএমআরের প্রকাশ নিয়ে কী পদক্ষেপ, তা পরবর্তী সময়ে জানানো হবে বলে জানা গেছে।

গোটা ঘটনা নিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “একজন বলছেন OMR প্রকাশ করলে সমাধান হয়ে যাবে আর আর একজন বলছেন প্রকাশ করলেই জেল! একজন প্রাক্তন জজ আর একজন বর্তমান আইনজীবী। ভাবুন! এই প্যাঁচে যোগ্যরা বলি হবেই। যদি ওরা জেলে যায় যাক না। এতে যদি যোগ্যরা বাঁচে তাতে অসুবিধা কোথায়? আগাম ভয় দেখিয়ে কাকে রক্ষা করা হচ্ছে? আইনের পাশাপাশি নোংরা রাজনীতি চলছে এ কথা বলতে কোনো দ্বিধা নেই।”