SSC, শিক্ষক নিয়োগ: শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও ৪৮ বছর বয়সের চ্যালেঞ্জ জয় করে চাকরিতে যোগদানের স্বপ্ন দেখা এক চাকরি প্রার্থী প্রায় তিন মাস ধরে স্কুল শিক্ষক নিয়োগের জটিল প্রক্রিয়ায় আটকে রয়েছেন। প্রশাসনিক বিভাগগুলির মধ্যে দায়িত্ব পালনে গড়িমসি এবং সুপারিশ নীতির দ্বন্দ্বে তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে আছে।
কী হয়েছে?
বীরভূমের এক আপার প্রাইমারি স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) রিকমেন্ডেশন লেটার পেয়েছিলেন এই প্রার্থী। কিন্তু স্কুলে যোগদানে গিয়ে তিনি দেখেন, পোস্টটি অন্য ক্যাটাগরির। এনিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে, ডিআই প্রার্থীকে অন্য একটি স্কুলের জেনারেল পোস্টে নিয়োগের জন্য এসএসসি-র কাছে পুনরায় রিকমেন্ডেশন চিঠি পাঠানোর সুপারিশ করেন।
প্রশাসনের গোলকধাঁধা: কে দেবে জবাব?
ডিআই-এর দাবি, পূর্বেও এমন সমস্যায় জেনারেল পোস্টে পিএইচ প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসএসসি এবার ডিআই-এর সুপারিশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জানায়, জেনারেল পোস্টে রিকমেন্ডেশন দেওয়ার এখতিয়ার ডিআই-এর নেই। ফলে, প্রার্থীর পুনঃসুপারিশের আবেদন ঝুলে থাকে। এদিকে, প্রার্থী শারীরিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসএসসি ও ডিআই অফিসে বারবার ছুটলেও আজও মেলেনি সমাধান।
চেয়ারম্যানকে জানিয়েও নিরাশ
এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে বিষয়টি জানানো হলেও এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রার্থীর অভিযোগ, “এসএসসি ও শিক্ষা দপ্তরের টানাপড়েনের বলি হচ্ছি আমি। কবে পর্যন্ত অপেক্ষা করব? আমার বয়স ৪৮—এই বয়সে চাকরি না পেলে ভবিষ্যৎ কী?”
প্রশাসনের ‘না’ বলার খেলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রার্থী
এসএসসি সূত্রে দাবি, ডিআই-এর সুপারিশ নীতিবিগর্হিত। জেনারেল পোস্টে রিকমেন্ডেশন দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট স্কুলে শূন্য পদ নিশ্চিত করতে হবে, যা ডিআই করেননি। অন্যদিকে, শিক্ষা দপ্তরের এক কর্তার বক্তব্য, “পি এইচকোটা ও জেনারেল পোস্ট নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সমন্বয়ের অভাবেই সমস্যা চলছে।”
প্রতিবন্ধী প্রার্থীর এই লড়াই প্রশাসনের অদক্ষতা ও সমন্বয়হীনতার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে। প্রশ্ন উঠছে, “এই ভাবে তিন মাস ধরে চাকরির জন্য ঘুরতে বাধ্য করা নীতির ব্যর্থতা। দায় নিতে হবে এসএসসি ও ডিআই-কে।”