নিউজ ডেস্ক: এবার কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। ২০১৬ আপার প্রাইমারি নিয়োগ এখনো কেন শেষ নয়? প্রশ্ন আদালতের। “শিক্ষামন্ত্রী হোক বা রাজ্যের যে কেউ, কাকে বললে সমাধান হবে? খুঁজে বের করে সমাধান করুন।” মন্তব্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থ সারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। আগামী ১৬ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। নিয়োগ কীভাবে জানাতে হবে, সবটা জানাতে হবে আদালতকে। বস্তুত, ২০২৪ সালের ২৮ অগাস্ট ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল ১৪ হাজার ৫২ জনের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু তার মধ্যে SSC ১২ হাজার ৪৮২ জন প্রার্থীর কাউন্সেলিং করে চাকরিতে যোগদান করিয়েছেন। তবে অবশিষ্ট রয়েছে ১৪৮২ জন। ফের মামলা হয় কোর্টে সেই সময়ই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল চার সপ্তাহের মধ্যে কাউন্সিলিং সম্পন্ন করার। কিন্তু তা না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা হয়।
বিচারপতি চক্রবর্তী এবং বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘কোনও অজুহাত দেখাবেন না। কেন কার্যকর হয়নি নির্দেশ? তা হলে কী ভাবে কাউন্সেলিং করলেন? আপনার কী ক্ষমতা রয়েছে, জানার দরকার নেই। আদালতের নির্দেশ পালন করতে হবে। এখান থেকেই আধিকারিকদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেব।’’ এর পরেই বিচারপতিদের বেঞ্চ ডেপুটি শেরিফকে ডেকে পাঠায়। এসএসসির আইনজীবী অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের কথা শুনুন।’’ বিচারপতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এত দিন গেল, নির্দেশ কার্যকর হয়নি কেন?’’ আগামী ১৬ মে মামলা রাখা হবে বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশ কার্যকর করা হয়েছে কি না, বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও ভূগোলে নিয়োগ না পেয়ে আদালত অবমাননার মামলা হয়। সেই মামলায় তীব্র ভৎসনার মুখে পড়ে এসএসসি।
এসএসসি জানায়, ভূগোলে OBC মেল সিট না থাকায় চাকরি দেওয়া যায়নি। যদিও জবাবের পরই বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘এটা এসএসসি-র ভুল। তার দায় এসএসসি’র। গ্রেফতার করে জেলে পাঠাব চেয়ারম্যানকে এজলাস থেকে।’
বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ”নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর সময় দুটো ভাগে শূন্যপদ ঠিক হয়। ঘোষিত শূন্যপদ আর বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর সম্ভাব্য শূন্যপদ। তাহলে এখন কেন এসএসসি বলছে ভুগোলে শূন্যপদ নেই?”
বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী বলেন, ”যদি এসএসসি চেয়ারম্যান সমাধান করতে না পারেন, আদালত তা মেনে নেবে না। ভূগোলের আসন নিয়ে এসএসসি রাজ্য সরকার নাকি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবে, সেটা তাঁদের সমস্যা। এসএসসি কীসের জন্য? এই ধরনের সমস্যা যাতে না হয় তা দেখার জন্যই তো। এসএসসি-র জন্য সমস্যা, তা মেটাতে হবে এসএসসি-কেই। আদালতের নির্দেশ মতো উচ্চপ্রাথমিকের নিয়োগ তালিকার প্রত্যেককে চাকরি দিতে হবে। শেষ সুযোগ দিচ্ছে আদালত। চাকরি এরপরে না পেলে হাইকোর্ট কড়া পদক্ষেপ নেবে৷” বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”কাউন্সেলিং এসএসসি করে স্কুল বাছাইয়ের জন্য। তাহলে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির শূন্যপদ নেই কেন? রাজ্য সরকার অনুমতি দিলে আমরা করে দেব৷ বা আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করতে হবে কেনো? ভূগোলে ৪৪ শূন্যপদের ৩৬ নিয়োগ সম্পূর্ণ। বাকি নিয়োগের ক্ষেত্রে এসএসসি সমস্যায় থাকলে সমস্যা তাদেরকে মেটাতে হবে।”