SSC, চাকরি বাতিল: রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের পর চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ এখন পুরোনো সরকারি চাকরিতে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন করছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে ইতিমধ্যেই ৪০০-র বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এদের অনেকেই পূর্বে প্রাথমিক বিদ্যালয় বা অন্যান্য সরকারি বিভাগে কর্মরত ছিলেন এবং পরে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন।
আদালতের নির্দেশ ও ফেরার প্রক্রিয়া
গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট প্যানেল বাতিলের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে জানায়, যারা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে এসএসসি-র স্কুল চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা চাইলে পূর্বের পদে ফিরতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তিন মাসের মধ্যে তাদের পুনর্বহাল করতে হবে এবং চাকরির সময়কালে কোনো বিচ্ছিন্নতা গণ্য হবে না। এই নির্দেশনার পর থেকেই চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা দপ্তরে আবেদন জমা দিচ্ছেন।
শিক্ষা দপ্তরের তদন্ত ও চ্যালেঞ্জ
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি আবেদন যাচাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে, আবেদনকারীদের পূর্ববর্তী চাকরির ইতিহাস, পদ ও বিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। একাধিক আবেদনকারী আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও উচ্চস্তরের স্কুলে যোগ দেওয়ায় তাদের ফেরার অনুরোধ জটিলতা তৈরি করছে। দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, “আবেদনগুলির নথি পর্যালোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ।”
আন্দোলন বনাম প্রশাসনিক পথ
এদিকে, এসএসসি প্যানেল বাতিলের বিরুদ্ধে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের একাংশ আদালতের নির্দেশকে “আংশিক সমাধান” বলে মনে করছেন। তবে যারা পরিবারের আর্থিক সংকটের কথা ভেবে পুরোনো চাকরিতে ফিরতে চাইছেন, তাদের পক্ষে এই সুযোগ গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার এক আবেদনকারী শিক্ষিকা বলেন, “স্কুলের চাকরি চলে যাওয়ায় সংসার চালানো কঠিন হচ্ছিল। পুরোনো চাকরিতে ফিরলে অন্তত আর্থিক সুরক্ষা মিলবে।”
কী হতে পারে সামনে?
শিক্ষা দপ্তর অনুমান করছে, আবেদনের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পাশাপাশি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফেরার চাহিদা বাড়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের প্রয়োজন হতে পারে। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের রায় পালনে রাজ্য সরকারের গতি ইতিবাচক হলেও চাকরি পুনর্বহালের প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকবে।
এই পরিস্থিতিতে, চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ আইনি লড়াই ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পথে থাকলেও অনেকেই এখন প্রশাসনিক সমাধানের দিকে ঝুঁকছেন। রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে এই সংকট মোকাবিলায় সরকারি পদক্ষেপই এখন সমস্ত চোখ।