নিউজ ডেস্ক: গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি। নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে, তাই গোটা নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এই চাকরিহারাদের বড় অংশই হলেন শিক্ষক। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশস্তরের শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হয়েছে। এর পাশাপাশি বাতিল হয়েছে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি স্তরের কর্মীদের। অযোগ্য প্রার্থীদেরর পাশাপাশি আদালতের নির্দেশে কাজ হারিয়েছেন বহু যোগ্য প্রার্থীও।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে চাকরি বাতিল হয়নি, তাঁদেরও এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে। বিয়েও ভাঙছে এঁদের অনেকের। পাত্রীর বাবা–মা পাত্রের পরিবারকে সাফ জানাচ্ছেন, ‘শিক্ষকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবো না!’
কিছুদিন আগেই আদালতের নির্দেশ মেনে আপার প্রাইমারিতে (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) চাকরি পেয়েছেন ঝাড়গ্রামের এক তরুণ। পরিবার বিয়ের জন্য পাত্রী দেখা শুরু করে। বছর ৩৭–এর ছেলের জন্য পুরুলিয়াতে মেয়ে দেখে পরিবার। দুই পরিবারের সম্মতিতে ঠিক হয়, পাকা কথা হবে কাল, মঙ্গলবার। এরই মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে এসেছে! আপার প্রাইমারি চাকরি বাতিল না হলেও, এর প্রভাব এসে পড়েছে ঝাড়গ্রামের ওই শিক্ষকের উপর। তাঁর চাকরি দিব্যি বহাল থাকলেও শনিবারই পাত্রীর বাবা ফোনে পাত্রের পরিবারকে জানান, ‘আপনার ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবো না। মঙ্গলবারের পাকা কথাও বাতিল করছি।’ যদিও শিক্ষকের বাবা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে ছেলের চাকরি তো বাতিল হয়নি! পাত্রীর পরিবার তবু অনড়।
ঝাড়গ্রামেরই প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষকের জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছিল হাওড়ার সাঁকরাইলে। সেখানেও এক ঘটনা। মেয়ের বাড়ি থেকে ছেলেকে ফোনে বলা হয়েছে, ‘হাই স্কুলের চাকরি বাতিল হয়েছে। শুনলাম, প্রাথমিকের চাকরিও বাতিল হবে। তাই আপাতত বিয়ের কথাবার্তা থাক। পরে না হয় যোগাযোগ করব।’
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আপার প্রাইমারির শিক্ষক বলেন, ‘গত বছর ডিসেম্বরে স্কুলে যোগ দিই। আমাদের তো চাকরি যায়নি। কিন্তু এমনই অবস্থা যে আমাদেরকেও মানুষ সন্দেহ করছেন। খুবই দুর্ভাগ্যজনক!’