SSC: শিক্ষকদের চাকরি বাতিল রিভিউ পিটিশন নিয়ে সংশয় আইনজীবীদের মধ্যে! কিউরেটিভ পিটিশনের সুযোগ আছে?

6158
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না

নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য ও অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে নতুন করে জেলাভিত্তিক তথ্য চেয়েছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর। সম্প্রতি ২৫,৭৫২ জন চাকরিহারা শিক্ষকের মধ্যে যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা স্কুল সার্ভিস কমিশন জমা দিয়েছে। এবার এই তালিকা বিশ্লেষণ করে জেলাভিত্তিক পদক্ষেপ নেবে স্কুল শিক্ষা দপ্তর।  

এদিকে, চাকরিহারা শিক্ষকদের স্বার্থে রিভিউ পিটিশন দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং স্কুল শিক্ষা দপ্তর। তবে এই রিভিউ পিটিশন আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।  

আইনজীবীদের সংশয়

পড়ুন:  'শিক্ষা ব্যবস্থাকে এভাবেই গুরুত্বহীন করা হচ্ছে', মাধ্যমিক পরীক্ষার অনলাইন ফর্ম ফিলাপ নিয়ে হুঁশিয়ারি পর্ষদের! যা বলছেন শিক্ষকরা

বর্ষীয়ান আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের মতে, “টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড ছাড়া রিভিউ পিটিশন সাধারণত গ্রহণযোগ্য হয় না। এতে রায় বদলানোর সম্ভাবনা খুবই কম। কিউরেটিভ পিটিশনেরও তেমন সুযোগ নেই।”  

আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খুব কম ক্ষেত্রে রিভিউ পিটিশন গৃহীত হয়। শুধুমাত্র নতুন কোনো তথ্য থাকলে, যা আদালতে আগে উপস্থাপন করা যায়নি, সেক্ষেত্রে এটি সম্ভব। কিন্তু এই মামলায় তা প্রযোজ্য নয় বলেই মনে হচ্ছে।”

আইনজীবি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আমার অভিজ্ঞতায় আমি কখনও রিভিউ পিটিশন গ্রহণযোগ্য হয়েছে দেখিনি। এই মামলায় কিউরেটিভ পিটিশনের গ্রাউন্ডও নেই। বিরলের মতো বিরলতম ক্ষেত্রে কিউরেটিভ পিটিশন করা যায়।’

পড়ুন:  "আমরাও যোগ্য!" নিজেদের 'যোগ্য’ বলে দাবি করে স্কুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের

আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণে, “পরিসংখ্যান বলছে, ১০০টি রিভিউ পিটিশনের মধ্যে ৯২টি খারিজ হয়ে যায়। সাধারণত, রায় প্রদানকারী বেঞ্চের কাছেই রিভিউ পিটিশন যায়, তাই রায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।”

রাজনৈতিক ইমেজ নিয়ে চর্চা

কিছু মহলের অভিযোগ, রাজ্য সরকার নির্বাচনী ইমেজ রক্ষায় এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “এটি একটি বিচারাধীন বিষয়, তাই আমি কোনো প্রতিক্রিয়া দেব না।”

পড়ুন:  হল বেতন বৃদ্ধি! উপকৃত হবেন প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষিকা, ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবীরাও এই নিয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য দিতে নারাজ। আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উভয়েই এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেননি।  

পরবর্তী সম্ভাব্য পদক্ষেপ

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, রিভিউ পিটিশন খারিজ হলে কিউরেটিভ পিটিশনের সুযোগ থাকলেও তা অত্যন্ত দুর্লভ। সরকার যদি কোনো নতুন প্রমাণ বা ত্রুটির কথা স্বীকার করে হলফনামা দেয়, তাহলে কিছুটা সম্ভাবনা থাকতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনি লড়াইয়ের পথ কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে।