নিউজ ডেস্ক: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুক্রবার এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের আদালত অবমাননার মামলায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আদালতের নির্দেশে, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ও হেনস্থার ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব পেলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা। আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এই ঘটনাকে “অপরাধমূলক আদালত অবমাননা” আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং একে “বিচারব্যবস্থার মর্যাদার উপর সরাসরি আঘাত” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “এটি শুধু বিচারক বা আইনজীবীর ব্যক্তিগত অবমাননা নয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা।”
বিক্ষোভের বিস্তারিত বিবরণ
১. কারণ ও অভিযোগ:
– উচ্চ প্রাথমিক শারীর শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা (সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি) সত্ত্বেও কলকাতা হাইকোর্টে মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় বিক্ষোভে নামেন চাকরিপ্রার্থীরা।
– প্রতিবাদকারীদের দাবি, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং মামলার পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মধ্যে “অবৈধ আঁতাত” রয়েছে, যা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করছে।
২. ঘটনার চাঞ্চল্য:
– শুক্রবার বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বার (ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রিট) সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীরা বিচারপতির ও আইনজীবীদের বিরূদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে উত্তেজনা তৈরি করেন।
– পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা: আদালত চত্বরে ধারা ১৪৪ বলবৎ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। আইনজীবী সমিতির অভিযোগ, “পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে চোখ বুজে ছিল, যা সন্দেহের জন্ম দেয়।”
আদালতের জরুরি নির্দেশাবলি
– তদন্তের সময়সীমা: পুলিশ কমিশনারকে ১৯ মে, ২০২৫-এর মধ্যে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
– প্রমাণ সংরক্ষণ: ওল্ড পোস্ট অফিস স্ট্রিট ও কিরণশংকর রায় রোডের সিসিটিভি ফুটেজ অবিলম্বে জব্দ করে ডিজিটাল ফোরেনসিক পরীক্ষার নির্দেশ।
– হলফনামা জমা: অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ সহ ৮ জনকে তাদের বক্তব্য আফিডেভিটের মাধ্যমে আদালতে পেশ করার নির্দেশ।
বিক্ষোভকারীদের মূল অভিযোগ
অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে নির্দেশের পরেও উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি হাইকোর্টে। এক্ষেত্রে বিচারপতি এবং আইনজীবীদের অবৈধ আঁতাত আছে।