SSC: প্রাথমিকে হলেও আপারে নয় কেন? শিক্ষক হতে চাকরিপ্রার্থীদের আপ্রাণ লড়াই

2775
এসএসসি SSC শিক্ষক

SSC শিক্ষক নিয়োগ: দশ বছর পেরিয়েও চাকরির অনিশ্চয়তা কাটেনি উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক পদে আবেদনকারী হাজারো চাকরি প্রার্থীর। ইন্টারভিউ থেকে বঞ্চিত হয়ে তাঁদের জীবনের বসন্ত যেন হারিয়েছে রঙ। শুক্রবার দোল উৎসবেও ধর্মতলার মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশে প্ল্যাকার্ড হাতে সমবেত হয়েছিলেন তাঁরা। এই মূর্তির তলাতেই বিক্ষোভের ৯৯২ দিন পূর্ণ হয়েছে। ২২ মার্চ পূর্ণ হবে ১০০০ দিন। চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, এরপরই শুরু হবে অনশনসহ আরও তীব্র আন্দোলন।

কেন এই বিক্ষোভ?

২০১৫ সালে এসএসসি টেট (Teacher Eligibility Test) পাশের পর থেকেই নিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছেন বহু প্রার্থী। ২০১৯ সালে ইন্টারভিউ হওয়ার কথা থাকলেও দুর্নীতির অভিযোগে তা বাতিল হয়। ২০২২ সালে আবারও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হলে শূন্যপদের সংখ্যা আপডেট না করায় বহু চাকরি প্রার্থী বাদ পড়েন। “কলকাতা গেজেটের নিয়ম অনুযায়ী, ইন্টারভিউয়ের এক সপ্তাহ আগে সিট আপডেট বাধ্যতামূলক। কিন্তু তা মানা হয়নি,” বলছেন আজহার শেখ, যিনি ২০১৫ সালের টেট পাস করেও আজও বেকার। তাঁর মতো অনেকের বয়সই ৪০ পেরিয়ে গেছে, কেউ কেউ পঞ্চাশের কাছাকাছি।

পড়ুন:  SSC: স্কুল পছন্দ করেও শিক্ষক পদে চাকরি নিলেন না ২০০ জন! চতুর্থ কাউন্সেলিং ফেব্রুয়ারিতে করার দাবি

কী দাবি?

প্রতিবাদী মঞ্চের তরফে অভিযোগ, ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকদের অবসর বা স্থানান্তরের ফলে শূন্যপদ বেড়েছে। কিন্তু নতুন করে সিট গণনা না করায় হাজারো যোগ্য প্রার্থী ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পেলেন না। অন্যদিকে, প্রাথমিক স্তরে টেট পাসকারীদের একাধিকবার নিয়োগ করা হয়েছে। “উচ্চ প্রাথমিকের প্রার্থীরা কেন পিছিয়ে থাকবেন?” প্রশ্ন চাকরিপ্রার্থী সোমা নস্করের।

পড়ুন:  প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় আর রাজ্যের ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল মামলা শুনবেন না, যা জানাল জানাল সুপ্রিম কোর্ট, কি হবে?

শিক্ষা দপ্তরের বক্তব্য

শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া এগোচ্ছে। তবে বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, শূন্যপদ আপডেট ও স্বচ্ছতা ছাড়া নিয়োগে আস্থা ফেরানো যাবে না। 

যে পরিসংখ্যান মাথাচাড়া দিচ্ছে

– ২০১১ ও ২০১৫ সালের টেট পাস করা প্রার্থীরাও রয়েছেন বিক্ষোভে।  

পড়ুন:  SSC: ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলা, মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু

– গত সাত বছরে উচ্চ প্রাথমিকে ১০ হাজারের বেশি নিয়োগ হলেও প্রচুর পদ শূন্য বলে দাবি।  

– ২০১৯ সালে বাতিল হওয়া ইন্টারভিউয়ে ১.৫ লক্ষ প্রার্থী ছিলেন বলে জানান আজহার।  

আন্দোলনের আগামী পথ

“আমরা টেট পাস করেছি, কিন্তু চাকরি পেলাম না,” বলছেন চন্দন দে। ১০০০ দিন পূর্তিতে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। দোলের দিনেও মাতঙ্গিনী মূর্তির নিচে কাটানো সময় যেন প্রতীকী—রঙিন উৎসবেও জীবন যে এখনো ধূসর।