দুর্নীতিগ্রস্থ এসএসসিকে কেন ফের দায়িত্ব? এসএসসি বা রাজ্য সরকারকে চাপ সৃষ্টি করা হলো না কেন?

11088
স্কুল সার্ভিস কমিশন

নিউজ ডেস্ক: দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট, ২০১৬ সালের এসএসসি’তে (SSC Recruitment Case Verdict) নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে। এর ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। এই ভাবে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। গোটা দেশেই এই চাকরি বাতিলের রায় নিয়ে আলোচনা চলছে। কেন যোগ্য এবং অযোগ্য আলাদা না করে চাল ও কাঁকরকে একসঙ্গে বলি দেওয়া হল, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। 

এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “দুর্নীতির জন্য এসএসসি এবং রাজ্য সরকার প্রধানতম দায়ী। তার জন্যই তো সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের কাছ থেকে আমরা সবাই বিচার চেয়েছিলাম। কিন্তু আসল দোষীদের পরিবর্তে আনটেনটেডরা শাস্তি পেল! বিচারের মৌলিক নিয়ম অনুযায়ী প্রমাণ ছাড়া কেন আনটেনটেডদের বাতিল করা হলো? টেনটেডদের বাতিল করে আনটেনটেডদের বহাল রেখে পরবর্তী তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসএসসি বা রাজ্য সরকারকে চাপ সৃষ্টি করা হলো না কেন? দাগি অপরাধী নেতা মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে প্রমাণাভাবে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয় আর এখানে দুর্নীতির কোন প্রমাণ ছাড়া আনটেনটেডদের বাতিল করা হলো কোন যুক্তিতে? যে এসএসসি আগাগোড়া দুর্নীতির পাঁকে নিমজ্জিত এবং তা প্রমানিত তাদের দিয়ে পুনরায় যোগ্যতা মান নির্ণয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় কোন যুক্তিতে? কেন কোর্টের তত্ত্বাবধানে তা করা হলো না? জনসমক্ষে এ প্রশ্ন যেমন আমরা তুলে ধরছি তেমনি মূল অপরাধীদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি আনটেনটেডদের রক্ষা করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে গ্রহণ করতে হবে – এই দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শনিবার দ্রুত নিয়োগের কথা জানালেন কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন এত বড় নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে শেষ করা যাবে না! এই বিষয়টি নিয়ে তিনি এবার বললেন, তিন মাসের মধ্যে মেধা তালিকা প্রকাশ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু তো হবেই। এমনকী, দু’মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার চেষ্টা হবে।

নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিদ্ধার্থবাবুর বলেন, শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর একটি মন্তব্য নিয়ে প্রকাশিত খবরে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, তিন মাসের মধ্যে এই নিয়োগ সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয়। শনিবার তার ব্যাখ্যা দিয়ে সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘একটি নিয়োগ প্যানেলের বৈধতা থাকে এক বছর। তাই ততদিন পর্যন্ত নিয়োগ পুরোপুরি সমাপ্ত বলে দাবি করা যায় না। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে এই ব্যাখ্যাই দিয়েছিলাম।’ যদিও সিংহভাগ নিয়োগ তিনমাস, এমনকী দু’মাসের মধ্যেই শেষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। এসএসসি এবং আদালতের বিচারে সরাসরি অযোগ্যদের বাদ দিয়েই চলবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই শিক্ষা দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি যাওয়ার ঘটনায় রাজ্য সরকার যে চরম বিব্রত, তা বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই তড়িঘড়ি চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তিনি।

পড়ুন:  বহুদিনের দাবি মিটল! ৩ বা ৪% নয়, একধাক্কায় ভাতা বাড়ল ৭ গুণ! পকেট ভারী হবে বাংলার এই সরকারি কর্মীদের