‘১৭২০৬ জনের কথা রয়েছে হলফনামায়, থার্ড ফেজ, ফোর্থ ফেজ নিয়ে আমাদের…’, চাকরিহারাদের বার্তা ব্রাত্যর

3411
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রাত্য বসু

নিউজ ডেস্ক: যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে সোমবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরের সামনেটা। লাগাতার ধরনায় চাকরিহারারা। মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে আন্দোলনকারীদের কাজে ফেরার পরামর্শ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ‘১৭২০৬ জনের কথা রয়েছে হলফনামায়, কাজ করতে দিন আমাদের’, চাকরিহারাদের বার্তা ব্রাত্যর।

শুধুই কি তৃতীয় ফেজ পর্যন্ত কাউন্সিলিংয়ে চাকরি পাওয়ারা যোগ্য? সাংবাদিক সম্মেলন করে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘থার্ড ফেজ, ফোর্থ ফেজ নিয়ে আমরা জানিই না কিছু। এসব কথা আমরা বলিনি। এসএসসির চেয়ারম্যানও এটা বলেননি। এটা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারেও কোথাও লেখা নেই। যা লেখা নেই, তা কাল্পনিক ভাবে ধরে নিয়ে ওরা কেন এটা নিয়ে কথা বলছে জানি না।’

ব্রাত্য বসু বলেন, “বৈঠকের শুরুতেই বলেছিলাম, আইনি পরামর্শ ছাড়া এগোব না। ওঁদের কিছু দাবি ছিল, কিছু আইনি ভাবে করা যাবে, কিছু করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট তালিকা প্রকাশ করতে বলেনি। কোনও নির্দেশে তালিকা প্রকাশের কথা নেই। আমাদের সর্বচ্চ স্তরের আইনি পরামর্শদাতা, তাঁদেরই কথা এটা। সেটা করতে পারিনি। ওই বৈঠকেই বলেছিলাম আইনি পরামর্শ পেলে করতে পারব। ১৭ তারিখ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যে তালিকা দিয়েছে, তাতে ১৭ হাজার ২০৬ জনের কথা বলা হয়েছে। তাতে ভাগ আছে। সেই অনুযায়ী কাজ করছি। কাজ করতে দিন আমাদের। এমন কিছু করবেন না, করতে বাধ্য করবেন না, যাতে আবেদন আপনাদের বিপক্ষে চলে যায়। তালিকা এসএসসি শিক্ষা দফতরকে দিতে পারে। কাউকে কি টার্মিনেশন লেটার দেওয়া হয়েছে? বেতন বন্ধ করা হয়েছে? উত্তর হচ্ছে না। “

পড়ুন:  WBSSC SLST Mathematics: পূর্ববর্তী প্রশ্নপত্র, সহকারী শিক্ষক নবম-দশম শ্রেণী এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর প্রশ্নপত্র PDF

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বললেন, “রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি আমরা। এমন কিছু করবেন না, যা পিটিশনকে দুর্বল করে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘিত হয়, আদালতের অবমাননা যাতে না হয়, মনে রাখতে বলছি। সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উপযুক্তদের স্কুলে যোগ দিতে বলছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরাও বলছি, বেতন নিশ্চিতকরণের দায় আমাদের। আপনাদের জন্য লড়ছে SSC. মধ্যশিক্ষা পর্ষদকেও ঘেরাও করা হয়েছে। একমাত্র এই সরকারই আপনাদের পাশে আছে। আমরা যা করব, তা আইনি পরামর্শ নিয়েই করব। আগেই বলেছিলাম। আপনারা আপনাদের কাজ করুন, আমাদের আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের কাছে আবেদন।”

পড়ুন:  যে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট, আবার হবে পরীক্ষা, জেনে নিন কী বললেন WBSSC-এর চেয়ারম্যান

তিনি আরও বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ ভাবে চাকরিহারাদের পাশে রয়েছেন। তাঁর নির্দেশে, চাকরিহারাদের স্বার্থে শিক্ষা দফতর কাজ করে চলেছে। আজও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘চাকরি আমরা দিয়েছি, কারা খেয়েছে জানেন’। আমিও বলেছিলাম, সুুপ্রিম কোর্টে মামলা আমরা হেরেছি, তাহলে জিতল কারা? কারা জিতল সবাই জানেন। আমি আর বলছি না।”

এর আগে মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে ফের চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি গতকাল সন্ধে থেকে ১০ বার কমপক্ষে ফোনে কথা বলেছি। কলকাতায় থাকলে এক সেকেন্ডে হয়ত মিটিয়ে নিতে পারতাম। রাত ১২টা পর্যন্ত কথা বলেছি কেউ কেউ রিজিড আছে যে টেন্টেড, আনটেন্ডেড তালিকা বের করতে হবে! আরে আপনার কী যা আসে! কেন অন্য়দের কথায় পা দিচ্ছেন! ওটা দেখার জন্য রাজ্য সরকার, আদালত আছে। প্রমাণ নেব, আদালত কী বলেছে দেখব। আপনার তালিকার তো দরকার নেই! আপনি চাকরি কেরন, চাকরিটা আছে কি না, ঠিক মতো বেতন পাচ্ছেন কি না, সেটা আপনার দেখার দরকার। অন্যটা আপনার দেখার দরকার নেই। আমাদের উপর ছেড়ে দিন। মনে রাখবেন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র সরকারে ৬৯ হাজার লোকের চাকরি গিয়েছিল। কেউ ফিরে পায়নি। আমি বলছি আপনারা ফিরে পাবেন। আমরাই আপনাদের হয়ে কোর্টে গিয়ে লড়াই করেছি। ত্রিপুরায় ১০ হাজার লোকের চাকরি যায়। বিজেপি বলেছিল ফিরিয়ে দেব। সাত বছর হল ফেরায়নি। আমরা কিন্তু তেমন নই।”