নিউজ ডেস্ক: সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০১৬ সালে এসএসসির নিয়োগের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে চাকরি গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৩৫ জনের। তাঁদের মধ্যে যে সমস্ত ব্যক্তিকে অযোগ্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে তাঁদের বেতনও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ আদালতের।
যোগ্যদের কারও চাকরি যাবে না বলে নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে চাকরিহারাদের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে তাঁকে একযোগে আক্রমণ করলেন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, চাকরিহারাদের এই পরিস্থিতির জন্য তিনি এবং তাঁর সরকারই দায়ী। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া, ওএমআর শিট নষ্ট তাঁর সরকারই করেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, কে যোগ্য, কে অযোগ্য, তা রাজ্য সরকার জানে। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর কটাক্ষপূর্ণ পরামর্শ, ‘‘আপনিই সেই তালিকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান। আপনি তো আইনজীবী বলেন নিজেকে। তা হলে আপনিই যোগ্যদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করুন।’’
নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের যে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাকে কোনও রকম আশ্বাস বলে মানতেই নারাজ শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আজ যদি যোগ্যদের বাছাই করে পাস দেওয়া সম্ভব হয়, তা হলে সেই তালিকা সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া হল না কেন? মুখ্যমন্ত্রী আসলে নাটক করছেন। চাকরি বিক্রি করে ওঁর দল এবং ওঁর ভাইপো যে বিপুল পরিমাণ টাকা তুলেছেন, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের রেকর্ডিংয়ে ৭৩ বার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে। সিবিআই চার্জশিটেও তা রয়েছে।’’
শুভেন্দুর দাবি, ২০২২ সালে কলকাতা হাই কোর্টের তদানীন্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (বর্তমানে যিনি বিজেপির সাংসদ) পাঁচ হাজারের বেশি ‘অযোগ্যের’ চাকরি বাতিল করেছিলেন। রাজ্য সরকার যদি সেই রায় মেনে নিয়ে ‘২০০ কোটি টাকা খরচ করে’ সুপ্রিম কোর্টে না যেত, তা হলে যোগ্যদের এই দিন দেখতে হত না। বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, ১৫ এপ্রিলের মধ্যে রাজ্য সরকার যোগ্যদের তালিকা সুপ্রিম কোর্টে জমা না দিলে পতাকা ছাড়া বিজেপি বিধায়কেরা যোগ্য শিক্ষকদের সমর্থনে নবান্ন অভিযান করবে। চাকরিহারাদের আইনি সাহায্যেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘আদালতে আপনারা লড়াই করুন। আইনজীবীর খরচ বিজেপি পরিষদীয় দলের তরফে দেওয়া হবে।’’