নিউজ ডেস্ক: তবে কি দক্ষতার ভিত্তিতে কর্মচারীদের বাড়বে বেতন? নয়া পে কমিশন বদলে নতুন নিয়ম চালু করছে মোদী সরকার? এবার সরকারি কর্মীদের পে কমিশন নিয়ে বড় খবর সামনে এল।
তবে কি এবার অষ্টম বেতন কমিশন না বসিয়ে এ বার কর্মচারিদের দক্ষতা বা মুদ্রাস্ফীতির হারের নিরিখে বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র? যদিও এই ইস্যুতে সরকারিভাবে এখনও কোনও ঘোষণা করেনি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। নতুন বছরের মুখে মোদী সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের জল্পনাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উঠেছে তরজা।
আসলে গত কয়েক মাস ধরেই অষ্টম বেতন কমিশনের দাবিতে সরব রয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা। এই নিয়ে সংসদের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভায় প্রশ্নের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী। জবাবে তিনি বলেন, এখনই বেতন কমিশন তৈরির কোনও পরিকল্পনা করছে না সরকার। এর পরেই কর্মচারীদের দক্ষতা বা মুদ্রাস্ফীতির সূচকের উপর নির্ভর করে বেতন বৃদ্ধির জল্পনা শুরু হয়ে যায়।
জানা যাচ্ছে, এই ইস্যুতে প্রকাশ্যে না হলেও আড়ালে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। কী ভাবে বেতন কমিশনকে তুলে দিয়ে কর্মচারীদের স্বার্থরক্ষা করা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও নতুন পদ্ধতি বেতন কমিশনের আদৌ পরিপূরক হতে পারবে কিনা, তা নিয়ে আর্থিক বিশ্লেষকদের মনে ষথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
দক্ষতা ভিত্তিক বা মুদ্রাস্ফীতির উপর নির্ভর করে বেতন বৃদ্ধির সমর্থকদের যুক্তি, শেষ পর্যন্ত এই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিলে তা অবশ্যই যুগোপযোগী হবে। বেতন কমিশন সাধারণত ১০ বছর পর বসে। ফলে বেতন বৃদ্ধির জন্য এক দশক অপেক্ষা করতে হয় কর্মচারীদের। নতুন ব্যবস্থায় তার থেকে মুক্তি মিলবে।
পদোন্নতি নিয়ে আবার পাল্টা অভিযোগের সুর শোনা যায় সরকারি কর্মচারীদের গলায়। নতুন ব্যবস্থা চালু করা গেলে, এই দুই সমস্যা পুরোপুরি মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তখন উচ্চ মেধা সম্পন্ন যোগ্য কর্মচারীদের উচ্চ পদ দিতে বাধ্য হবে সরকার।
যদিও সমালোচকদের প্রথম প্রশ্ন কী ভাবে বা কিসের ভিত্তিতে সরকারি কর্মচারীদের যোগ্যতা বিচার করা হবে? উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সিংহভাগই কেন্দ্রের নীতি নির্ধারণের সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন। ফলে বেসরকারি কর্মীদের মতো তাঁদের রেটিং দেওয়া একরকম অসম্ভব।
তাছাড়া, এই পদ্ধতিতে স্বজন-পোষনের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষতার রিপোর্ট পেশের ক্ষেত্রে নিচু তলার সরকারি কর্মচারীদের থেকে অন্যায্য সুযোগ সুবিধা আদায় করার সুবিধা পেয়ে যাবেন পদস্থ অফিসার শ্রেণি। আর তাঁদের খুশি করতে গিয়ে নিয়ম নীতি ভাঙার রাস্তায় হাঁটবেন নিচু তলার কর্মীরা। ফলে সরকারি দফতরে লাগামহীন হতে পারে দুর্নীতি।
বর্তমান নিয়মে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বছরে দু’বার মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ পেয়ে থাকেন। দক্ষতার উপর নির্ভর করে বেতন ঠিক হলে, এই সুবিধা তাঁরা পাবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের অবশ্য দাবি, আগামী বছরের (পড়ুন ২০২৫) পয়লা জানুয়ারি থেকে অষ্টম পে কমিশন চালু হওয়া উচিত। দ্রুত ওই কমিশন বসাতে মোদী সরকারকে অনুরোধ করেছে ‘অল ইন্ডিয়া স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লোয়িজ় ফেডারেশন’ নামের কর্মচারী সংগঠন। বেতন কমিশন নাকি দক্ষতা ও মুদ্রাস্ফীতির উপর ভিত্তি করে বেতন বৃদ্ধি? শেষ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র, সেটাই এখন দেখার।