নিউজ ডেস্ক: ক্লাসরুমেই কনের সাজে দাঁড়িয়ে থাকা বিভাগীয় প্রধানের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিচ্ছেন প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া। আর এই ঘটনার সাক্ষী ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার রাজ্যের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ম্যাকাউট’-এর হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের এই ভিডিওটি মূহুর্তে ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। বিভাগীয় প্রধানকে ইতিমধ্যে ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী জানান, বিভাগীয় প্রধান ওই মহিলা অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়েছে। কেন ক্লাসরুমে প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার সঙ্গে তিনি মালাবদল ও সিঁদুর দান করেছেন, তা তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, “প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধান জানিয়েছেন, এটা তাঁদের পাঠ্যক্রমে থাকা প্রজেক্টের অঙ্গ।”
এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজির অধ্যাপিকা পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান ফ্রেশার্স অনুষ্ঠানের একটি অংশে বিয়ের বিষয়টি ছিল। তিনি বলেন, “কোনও ড্রামার একটা ক্লিপিং এভাবে ভাইরাল হতে পারে এটা আমার চিন্তার বাইরে। টিচার্স ডে, ফ্রেশার্স ডে এসব অনুষ্ঠানে তো নাচ, গান, নাটক হয়। কিন্তু নাচ, গান বাজে নাটকের একটা নির্দিষ্ট অংশ ভাইরাল হয়েছে। এটা আমরা ফ্রেশার্স পার্টি প্ল্যান করেছিলাম। যেখানে নাচ, গান, ড্রামা সবই হচ্ছে। সেই হিসেবেই ড্রামাটা হয়েছিল, যেখানে ছাত্র এবং শিক্ষক অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু একটা পার্ট নিয়ে সেটা ভাইরাল করে দিল। এটা আমার জন্য আশ্চর্যজনক বিষয়। আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আমি আইনি পথে হাঁটছি এবং অভিযোগও জানিয়েছি। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ যে তদন্ত কমিটি করেছে। যাঁরা তদন্ত করে সত্যিটা সামনে নিয়ে আসবে।”
ক্লাসরুমে বিয়ের নাটক যদি প্রজেক্টের অঙ্গই হয়ে থাকে তাহলে কেন ওই বিভাগীয় প্রধানকে ভাইরাল ভিডিওর জন্য ছুটিতে পাঠানো হল, সেই প্রশ্নও উঠছে। ভিডিও প্রকাশ হতেই তাই বিভাগীয় প্রধানকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
আরও বেশ কয়েকজনের উপস্থিতি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে। ওই ছাত্র অধ্যাপিকাকে সিঁদুর পরিয়ে দেন, হাঁটু মুড়ে বসে এগিয়ে দেন গোলাপও। ক্লাসরুমের ভিতরে এই ধরনের ঘটনা সামনে আসতেই হইচই পড়ে যায়।
উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী জানান, ১৬ জানুয়ারির ঘটনা। মঙ্গলবার সামনে এসেছে। উপাচার্য বলেন, ‘যে ছবি দেখলাম তাতে তো মনে হচ্ছে, সবই হয়েছে দিনের আলোয়, অন্যান্য পড়ুয়া ও ফ্যাকাল্টি মেম্বারের সামনে। তা হলে তখন কারও মনে হল না এতে অস্বস্তিকর কিছু আছে? বিষয়টা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ, এ ধরনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুবই অস্বস্তিকর। আর উনি হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট। ছেলেটি প্রথম বর্ষের।’
উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘উনি বলছেন এটা সাইকো ড্রামা। যদি তাও হয়, অনেক রকম টপিক আছে। এ রকম একটা সেনসিটিভ টপিক নিয়ে ড্রামা করতে হলে তো কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার দরকার ছিল। মা, বাবারা এখানে ছেলে মেয়েদের পড়তে পাঠান। আমাদের দায়িত্ব অনেক।’