SSC: আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। এক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুটি ভিন্ন নিয়ম প্রয়োগ করে প্রায় ৬০০ জন প্রার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দিয়েছে এসএসসি—এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল নতুন মামলা।
মামলাকারী অন্বেষা মুখোপাধ্যায়-সহ ৬০০ জন প্রার্থীর পক্ষে আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, আপার প্রাইমারি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি একসাথে প্রকাশিত হয়। বহু প্রার্থী দুই নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই অংশগ্রহণ করে এবং সফল হন। কিন্তু আপার প্রাইমারিতে তাঁদের ‘ইন সার্ভিস’ হিসেবে চিহ্নিত করে ইন্টারভিউয়ে বসতে দেওয়া হয়নি। অপরদিকে, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে নিযুক্ত শিক্ষকদের একই ‘ইন সার্ভিস’ অবস্থায় ইন্টারভিউয়ে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়ে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।
এই দ্বিচারিতা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। মামলাকারীদের দাবি, একই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম প্রয়োগ করে কমিশন বৈষম্য করেছে। এসএসসি-র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, যারা উচ্চ পদে চাকরি করছেন, তারা আপার প্রাইমারির ইন্টারভিউয়ে বসতে পারবেন না। অথচ এই একই নিয়ম ভেঙেই বহু প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৫ সালের বাতিল হওয়া একটি রুল দেখিয়ে বহু যোগ্য প্রার্থীকে ইন্টারভিউয়ে বসতেই দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। এতে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, যাঁরা পূর্বতন চাকরি ছেড়ে স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা চাইলে আগের চাকরিতে ফিরে যেতে পারবেন।
মামলাকারীরা বলছেন, এসএসসি-র সিদ্ধান্তজনিত কারণে তাঁরা চাকরি হারিয়েছেন। অথচ এসএসসি তাঁদের কোনও বিকল্প পথও দেখায়নি। তাঁদের বক্তব্য, “এসএসসি যেহেতু ভুল করেছে, তাই আমাদের আপার প্রাইমারিতে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়ার দায়িত্বও তাদেরই।”
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে এই মামলার দ্রুত শুনানি হতে চলেছে। SSC-র ভূমিকা নিয়ে ফের নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে এই মামলা। এখন দেখার, আদালত এই মামলায় কী রায় দেয় এবং কতদূর পর্যন্ত ন্যায় পায় বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা।