নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে হাওড়ার শিবপুর দিনবন্ধু ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের কঠোর নির্দেশে রেকর্ড সময়ে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর তৎপরতায় মামলার আবেদন শুনানির মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে থানায় অভিযোগপত্র জমা হয়। গত কয়েক মাস ধরে স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে সিআইডির জালে ধরা পড়া শিক্ষকদের তালিকায় সাম্প্রতিক সংযোজন সিরাজুল।
কমিটির রিপোর্টে ধরা পড়েন সিরাজুল
কলকাতা হাইকোর্ট গঠিত তিন সদস্যের বিশেষ কমিটি স্কুল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে জড়িতদের চিহ্নিত করতে গিয়ে সিরাজুলের নাম সামনে আনে। কমিটিতে রয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের প্রতিনিধিরা। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালের সেকেন্ডারি এডুকেশন নিয়োগ কেলেঙ্কারির সূত্রে সিরাজুলের চাকরিকে দুর্নীতিপ্রসূত বলে চিহ্নিত করা হয়।
এজলাসে তোলপাড়, ৫ মিনিটে এফআইআর
বৃহস্পতিবার বিচারপতি বসুর বেঞ্চে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষে আইনজীবী অভিযোগ করেন, “ডিআই থানায় বসে থাকলেও এফআইআর নথিভুক্ত করা হচ্ছিল না।” এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি। তিনি সিআইডি ও রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে এফআইআর রুজুর খবর আদালতকে জানানো হয়।
রাজনৈতিক সংস্রবের অভিযোগ
সিরাজুল ইসলাম তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা বন্ধু সেলের সদস্য বলে খবর। অভিযোগ, রাজনৈতিক যোগাযোগের সুবাদে তিনি দুর্নীতির মামলায় এতদিন ধরে পার পাচ্ছিলেন। মামলার পক্ষের আইনজীবী ফিরদৌস শামীম বলেন, “সোমা রায়ের মামলায় একের পর এক অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। আমরা আশাবাদী, ন্যায়বিচার পাবেন ক্ষতিগ্রস্তরা।”
পটভূমি
২০১১ সালের নিয়োগ কেলেঙ্কারির পর থেকেই সিরাজুলের নাম আলোচনায়। তবে সিআইডির তদন্তে সম্প্রতি তার ভূমিকা পুনরায় সামনে আসে। হাইকোর্টের গঠিত কমিটি এই প্রথম কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত এফআইআর দায়েশে আদেশ দেয়। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই মামলা নজির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরবর্তী পদক্ষেপ
সিআইডি এখন সিরাজুলের সম্পৃক্ততা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অন্যান্য অভিযুক্তদের তদন্ত তদারকি চালাচ্ছে। হাইকোর্টের কঠোর নজরদারিতে এই মামলার অগ্রগতি নিয়ে চলছে জোর কদমে তদন্ত।