নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা মহামূল্যবৃদ্ধি ভাতা (DA) সংক্রান্ত মামলার শুনানি আবারও পিছিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ২২ এপ্রিল শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হলেও আদালতের ব্যস্ততার কারণে মামলাটি এখন ৭ মে-র জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যদিও এই পুনঃতালিকাভুক্তি নিয়ে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্বেগ দেখা যায়নি। বারেবারে মামলাটি পিছিয়ে যাওয়ায় এমনিতেই আশাহত রাজ্যের সরকারি কর্মীরা।
কেসের বিস্তারিত
মামলাটির ডায়েরি নম্বর ৩৫২৯২/২০২২, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও মুখ্য সচিব বনাম রাজ্য কর্মচারী কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরামসহ ৮ জন প্রতিপক্ষের মধ্যে আইনি লড়াই চলছে। কর্মচারীদের দাবি, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সমান DA প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে, যা সংবিধানের ‘সমান কাজের জন্য সমান বেতন’ নীতির লঙ্ঘন। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের যুক্তি, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে DA-র হার নির্ধারণে আলাদা নীতি গ্রহণ করা যেতে পারে।
কেন পিছলো শুনানি?
গত ২২ এপ্রিল বিচারপতি বিক্রম নাথ ও সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে মামলাটি তালিকাভুক্ত থাকলেও সময়াভাবে শুনানি সম্ভব হয়নি। কম্পিউটার জেনারেটেড তালিকা অনুযায়ী, ৭ মে নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে ‘মোশন হিয়ারিং’ পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির সম্ভাবনা ছিল।
কর্মচারীদের প্রতিক্রিয়া
কনফেডারেশনের নেতা স্বপন কুমার দে বলেন, “আমরা ধৈর্য্য ধরেই লড়াই চালিয়ে যাব। ৭ মে-র শুনানিই হয়তো সিদ্ধান্তমূলক হবে।” অন্যদিকে, প্রশাসনের এক কর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “মামলা পিছনো মানেই সরকারের নীতিতে কোনো ছেদ পড়েনি। আমরা আইনি প্রক্রিয়াকে সম্মান করছি।”
পরিস্থিতির গভীরে
২০২২ সাল থেকে এই মামলা চললেও DA-র পার্থক্য নিয়ে কর্মচারীদের অসন্তোষ আরও পুরনো। গত কয়েক বছরে রাজ্যে একাধিক ধর্মঘট ও বিক্ষোভ হয়েছে, কিন্তু সমাধান হয়নি। আইনবিদদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ই এই বিরোধের চূড়ান্ত সমাধান দিতে পারে। তবে শুনানি বারবার পিছনোয় দুর্ভাগ্যজনক বলেই মন্তব্য সাধারণ কর্মচারীদের।
আগামী দিনের দৃষ্টি
৭ মে কি শেষ পর্যন্ত শুনানি হবে? নাকি আবারও বিলম্বের খেলায় মাঠ গরম হবে? প্রশাসন ও কর্মচারী—উভয় পক্ষের জন্যই এই মামলা এখন ‘পরীক্ষার সময়’।