নিউজ ডেস্ক: দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিতর্কিত মামলার ফাইনাল শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। বিচারপতি রায় রিজার্ভ করার পর এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবেন চাকরি প্রার্থীরা। এই মামলার রায়ই নির্ধারণ করবে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও ২ হাজারের বেশি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে কি না।
মামলার পটভূমি
২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য জুড়ে মোট সাড়ে ১১ হাজার শূন্যপদ প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে গত জানুয়ারি পর্যন্ত সাড়ে ৯ হাজার পদে নিয়োগ সম্পন্ন হয়। বাকি থাকা ২,২৩২টি পদ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। বিতর্কের মূল বিষয় ছিল, ২০২০ থেকে ২০২২ সালের ডি.এল.এড (D.El.Ed) কোর্সের সেশন সম্পন্ন করা প্রার্থীরা এই নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন কি না। পিটিশনকারীদের দাবি, কোভিড পরিস্থিতির কারণে তাদের কোর্স সেশন পিছিয়ে গেলেও টেট পাস করার পর তারা নিয়োগের যোগ্য। তবে রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, শুধুমাত্র ২০২২ সেশনের প্রার্থীদেরই আবেদনের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
আদালতের শুনানি ও সম্ভাব্য রায়
আজ সুপ্রিম কোর্টে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা বিস্তারিত যুক্তি উপস্থাপন করেন। পিটিশনকারীদের পক্ষে জোর দেওয়া হয়, “সেশন পিছোনো হলেও ডিগ্রি এবং টেটের মানদণ্ড পূরণ করেছে প্রার্থীরা। নিয়োগে বাধা দেওয়া উচিত নয়।” অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়, “নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সেশনের প্রার্থীদেরই সুযোগ দেওয়া সম্ভব।” শুনানির শেষে বিচারপতি রায় প্রকাশ না করে তা রিজার্ভ করেন। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, রায় যদি পিটিশনকারীদের পক্ষে যায়, তাহলে অবিলম্বে বাকি ২,২৩২ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাব
এই নিয়োগ সম্পন্ন হলে রাজ্যের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংকট অনেকটাই কমবে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী-শিক্ষকের অনুপাতের উন্নতি ঘটবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়োগপ্রত্যাশীদের একাংশ জানান, “দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলছে। রায় যেন আমাদের পক্ষে আসে, সেই আশায় রয়েছি।”
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থায় এই নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রায় দুই বছর ধরে ঝুলে থাকা এই মামলার নিষ্পত্তি এখন সবার চোখ আদালতের দিকে। নিয়োগপ্রত্যাশী হাজারো তরুণ-তরুণীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই রায়ের ওপর।