নিউজ ডেস্ক: উচ্চ মাধ্যমিকের ৩য় সেমিস্টার পরীক্ষার সময় বৃদ্ধি এবং ৩য় ও ৪র্থ সেমিস্টারের কয়েকটি বিষয়ে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য “অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন” এর পক্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতিকে ২০ দফা দাবি পাঠানো হয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে যে বিষয়গুলি জানানো হয়েছে সেগুলি হলো – উচ্চ মাধ্যমিক এর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষার ৩য় ও ৪র্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা সকাল ১০ টায় শুরু করা সঠিক নয়, কারণ পরীক্ষার্থী, স্কুল শিক্ষক- শিক্ষাকর্মী সহ পরীক্ষার সাথে যুক্ত সকলকে সকাল ৯ টার মধ্যে পরীক্ষা সেন্টারে পৌঁছাতে হয়। মানসিক, শারীরিক ও বাস্তবিক ভাবে পরীক্ষা শুরুর সময়টা যুক্তিসঙ্গত: নয়। তাই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বেলা ১২ টায় শুরু করতে হবে। তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা যেখানে সেন্টার হয়েছে সেই সকল স্কুলে অন্যান্য ক্লাসগুলির পঠনপাঠনের স্বার্থে যাতে ৪র্থ সেমিস্টার পরীক্ষার সেন্টার না হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে।
এই পরীক্ষায় নিযুক্ত কনভেনার ও জয়েন্ট কনভেনারদেরকে বারংবার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাদেরকে পরিবর্তন করে অন্য উচ্চ মাধ্যমিক সেকশনের বিষয় শিক্ষক-দেরকে কনভেনার ও জয়েন্ট কনভেনার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হোক। উচ্চ মাধ্যমিক ৩য় সেমিস্টারের পরীক্ষার প্রশ্ন গুলি এতো বেশি সংখ্যক পেজে তৈরি করা হয়েছে, যে প্রশ্নের ভারিত্বে ছাত্র ছাত্রীরা পরীক্ষার আগেই মানসিকভাবে চাপে পড়ছে। ৪০ নম্বরের প্রশ্ন ৪০-৫০ পাতার হয়েছে অনেক সাবজেক্টেই। তাতে পাতা ওলটাতে ওলটাতেই সময় চলে যাচ্ছে। ডিটিপি সহ ডিজাইনের অদক্ষতা ও পরিকল্পনা-হীনতাই দায়ী। রেজিষ্ট্রেশন অনুযায়ী বিষয় ও মিডিয়াম অনুযায়ী মোট পরীক্ষার্থী সাপেক্ষে প্রশ্ন ছাপানো হোক। ২০২৫-২৬ সেশনের ৩য় সেমিস্টারের পরীক্ষায় গণিত, হিসাবশাস্ত্র ও ফিজিক্স পরীক্ষার প্রশ্ন সময় সাপেক্ষে উপযুক্ত না হওয়ায় ছাত্র- ছাত্রীদেরকে উক্ত বিষয়গুলিতে ১০ নম্বর গ্রেস মার্কস দেওয়া হোক। ২০২৬ সাল থেকে ৩য় সেমিস্টারের পরীক্ষায় ৯০ মিনিট সময় দেওয়া হোক। দ্বাদশ শ্রেণির ৩য় সেমিস্টার পরীক্ষার ওএমআর প্রশ্ন কাঠামোয় এক একটা এমন ধরনের প্রশ্ন প্যাটার্ন আছে যেগুলো চারটি প্রশ্নের উত্তর করার সমান ও সময়ও চারগুণ লাগছে।
এই ধরনের প্রশ্ন নির্বাচন বাদ দেওয়া হোক, যেমন – বাম দিক ডান দিক মেলানো। ২০২৬ সাল থেকে ৩য় সেমিস্টারের পরীক্ষার রুটিন তৈরির সময় সঠিক বাস্তবসম্মত চিন্তা ভাবনা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ কয়েকটি বিষয়ের আগের দিন ছুটি রাখতে হবে। মডারেটর নির্বাচন সঠিকভাবে করতে হবে। পরীক্ষার প্রশ্ন যাতে ছাত্র ছাত্রীদের ক্ষতি না করে সেটা ভেবেই প্রশ্ন তৈরি ও সেই সেট নির্বাচন করতে হবে। তৃতীয় সেমিস্টারের প্রশ্নে সব পাতায় বুকলেট নম্বর অনেকবার ছাপার ফলে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন পড়তে অসুবিধা হচ্ছে। যেখানে ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ সেখানে কয়েকটি বিষয়ে প্রয়োজনের তুলনায় রাফ পেজের সংখ্যা অনেক কম। রাফ পেজের সংখ্যা কয়েকটি বিষয়ের জন্য বৃদ্ধি করতে হবে। প্রত্যেক বিষয়ের প্রশ্নের জন্য সিলেবাস অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট ব্লুপ্রিন্ট বা গাইডলাইন তৈরি করতে হবে এবং সংসদ নির্দিষ্ট সব সাবজেক্টের প্রশ্নকর্তাকে তা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। সিলেবাস অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক চতুর্থ সেমিস্টারের পঠনপাঠনের সময় কম, সেই জন্য সিলেবাস শেষ করা সহ পঠনপাঠন সময় বৃদ্ধি করার জন্য ৪র্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা ১মাস মতো পিছিয়ে মার্চ মাসে করা হোক। উচ্চ মাধ্যমিক ৪র্থ সেমিস্টার পরীক্ষার সেন্টার ফিজ ২৫ টাকার নোটিফিকেশন থাকলেও বেশির ভাগ স্কুলকে ছাত্র ছাত্রী প্রতি অনেক বেশি টাকা দিতে হয়েছে। সেই বিষয়ে সংসদের সঠিক ফিজ কালেকশনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। সমস্ত বিষয়ের প্রজেক্টের টপিক সহ লেখার জন্য গাইডলাইন একটি বই / পিডিএফ কপি আকারে সংসদের পক্ষ থেকে প্রকাশ করতে হবে।
সমস্ত বিষয়ের জন্য স্থায়ী বিষয় শিক্ষক অবিলম্বে নিয়োগ করতে হবে ও বিষয়গুলির যথাযথ পাঠদান ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। যে সকল স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সাবজেক্ট পারমিশন আছে দীর্ঘদিন ধরে সেই সাবজেক্টের পোস্ট পারমিশন নেই, সেই সাবজেক্টগুলিতে পোস্ট পারমিশন দিয়ে ভেকেন্ট পোস্টের অনুমোদন অবিলম্বে দেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠন এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন গরাই বলেন, “সংসদ ৩য় ও ৪র্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা ও পঠনপাঠন নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে বাস্তব সমস্যাগুলি সমাধান না করলে ছাত্র ছাত্রীরা অনেক সমস্যায় পড়বে। সংগঠন এর রাজ্য সভাপতি মনোজ কুমার মন্ডল বলেন, সিলেবাস অনুযায়ী পঠনপাঠন সময় পর্যাপ্ত নয়, সে বিষয়ে সংসদের চিন্তা ভাবনা করা দরকার।”