নিউজ ডেস্ক: সঠিক পদ্ধতি মেনে রায় দেননি প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়! ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলায় অভিযোগ করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলায় নিশানা করলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে।
বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে তাঁর বক্তব্য, ‘‘তখনকার সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতির সঠিক বিচার পদ্ধতি মেনে বিচার করেননি। শুনানি পদ্ধতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চ সকলকে বলার সুযোগ দেয়নি। বিচারপতি খেয়ালখুশি মতো শুনানি পর্ব চালিয়ে গিয়েছেন।’’
বৃহস্পতিবার এই মামলায় এজি অভিযোগ করেন, মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পরে শুনানি স্থগিত করে দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ। তার পরে পর্ষদের কাছে পাল্টা হলফনামা তলব করেছিলেন। অথচ আগে সেই একই আবেদন তিনি বাতিল করে দিয়েছিলেন।
তখন এজির উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘এখন কেন এই দাবি করছেন? আপনারা তখন তা মেনে নিয়েছিলেন। নির্দেশনামায় সে সবের উল্লেখ রয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে এজি সাফাইয়ে বলেন, ‘‘কিছু করার ছিল না। প্রতিটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তো আর ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়া যায় না।’’ তাঁর সওয়াল, ‘‘বিচার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যে কাউকে যখন খুশি ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন ওই বিচারপতি। বিরুদ্ধে কোনও নির্দেশ দিতেই পারেন। কিন্তু একটি পদ্ধতি তো অবলম্বন করা উচিত।’’
রায় ঘোষণার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলে এজি বলেন, ‘‘শুনানি শেষের পরের দিনই রায় ঘোষণা করে দিলেন। এত তাড়া কীসের ছিল? বিচারপতি (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় শুনানি শেষের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রায় দিতেন। সেটা তিনি পরম্পরা করে নিয়েছিলেন। বলতেন, যত বড় মামলা হোক শুনানি শেষের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রায় ঘোষণা করব। প্রাথমিক মামলার রায় এর তড়িঘড়ি দেওয়া হল কেন?’’
এজির যুক্তি, দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য কোনও তথ্য প্রমাণ সামনে আসেনি। দুর্নীতির অভিযোগের পরিণাম মারাত্মক। কিন্তু শুধু অনুমানের ভিত্তিতে বিচারপতি দুর্নীতির কথা লিখে দিলেন।
যদিও মামলার শুনানিতে পর্ষদের উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট মূল্যায়নে বাইরের সংস্থাকে কেন বেছে নেওয়া হয়েছিল? কী ভাবে মূল্যায়নের বরাত পেল ওই সংস্থা? কেন প্রথমে বরাতের বিষয়ে অন্য কেউ জানল না? কোন আইনের ভিত্তিতে তাদের বরাত দেওয়া হল? বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো থেকে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত চলে শুনানি। রাজ্য তথা পর্ষদের তরফে সওয়াল করেন এজি। আগামী ২৩ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।