কলকাতা, ০৮ জুন ২০২৫: গরমের ছুটি শেষ হওয়ার পর স্কুল খুলেছে। তবে ভ্যাপসা গরম আর অসহ্য দাবদাহে সমস্যায় পড়ছে শিশুরা। তীব্র গরমের কারণে দেশের একাধিক উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম রাজ্যে স্কুলের গরমের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও এরাজ্যে ফের ছুটি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ ও অস্বস্তিকর আর্দ্রতায় পশ্চিমবঙ্গের স্কুল জীবন বিপর্যস্ত। নির্ধারিত সময়ে ছুটি শেষে স্কুল খোলা হলেও, প্রচণ্ড গরমের কারণে পঠন-পাঠনে ব্যাহত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষে ভ্যাপসা গরমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভোগান্তির অন্ত নেই।
উত্তরের রাজ্যগুলির ছুটি বৃদ্ধি:
এই প্রেক্ষাপটেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের সিদ্ধান্ত। সেখানে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরগুলি স্পষ্ট ঘোষণা করেছে যে চলতি বছরের গরমের ছুটি ১ সপ্তাহ বাড়ানো হচ্ছে। এর ফলে এই রাজ্যগুলিতে স্কুলগুলি আগামী ৩০শে জুন থেকে খুলবে। তীব্র তাপপ্রবাহ ও জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে কি বাড়বে ছুটি?
উত্তরের রাজ্যগুলির এই সিদ্ধান্তের খবর পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছতেই প্রশ্ন উঠেছে, “বাংলায় কি ফের গরমের ছুটি বাড়ানো হবে?” শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদ মহলের একাংশের ধারণা, রাজ্যের বর্তমান ভোগান্তি ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলির নজিরের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গেও ছুটি বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
শিক্ষক-অভিভাবক মহলে চাপা উত্তাপ:
“শিশুরা ক্লাসে একদম ক্লান্ত, মনোযোগ দিতে পারছে না। আমরা নিজেরাও প্রচণ্ড কষ্টে পড়ছি,” জানালেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। অনেক অভিভাবকও স্কুলে পাঠাতে অনিচ্ছুক, গরমে সন্তানের অসুস্থ হওয়ার ভয় তাদের পেয়ে বসেছে।
সরকারি স্তরে নীরবতা:
তবে আপাতত রাজ্য শিক্ষা দপ্তর বা প্রশাসনের তরফে ছুটি আরও বাড়ানোর বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বা ইঙ্গিত প্রকাশ্যে আসেনি। পূর্বের নির্দেশ অনুযায়ী স্কুলগুলি স্ব স্ব ব্যবস্থায় সময়সূচি অনুযায়ী স্কুল চলছে। শিক্ষা মহল সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের তাপমাত্রা ও পরিস্থিতি কেমন থাকে এবং উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির সিদ্ধান্তের প্রভাব কতটা পড়ে, সেদিকে নজর রাখছে রাজ্য কর্তৃপক্ষ।
সতর্কবার্তা:
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যে আগামী এক সপ্তাহেও ভ্যাপসা গরম ও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত গরমের ছুটি বাড়বে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত পানীয় জল ও ছায়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে।
গরমের মাঝে ক্লাসে মন বসানো ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে যেমন কঠিন, তেমনি শিক্ষকদের পক্ষেও। এখন দেখার, উত্তাপের এই দাপটে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে পড়াশোনার স্বাভাবিক ছন্দ ফেরাতে ছুটি বাড়ানো হবে নাকি শুধু ফ্যানের আওয়াজেই চলবে ক্লাস!